হিজলা প্রতিনিধি : বরিশালের হিজলা উপজেলার তৎকালীন কুচাই পট্টি ইউনিয়নের এক ভূমি খেকো চক্রের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে ভুক্তভোগী কৃষকদের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার,(২১ জুলাই) দুপুর ১২ টায় হিজলা উপজেলা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ভুক্তভোগী কৃষকদের পক্ষে, হিজলা উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ইউনিয়নের মোঃ মাহফুজ মাতাব্বর।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী মোঃ মাহফুজ মাতাব্বর বলেন, হিজলা উপজেলার তৎকালীন হিজলা গৌরব্দী ইউনিয়নের চরবিশকাঠালী মৌজার যাহার সিট নং ৪,জে এল নং ১৯ বর্তমানে যাহার অবস্থান তৎকালীন হিজলা গৌরব্দী ইউনিয়নে বর্তমান শরিয়তপুরের কুচাইপট্টি ইউনিয়নে।
এই জমিটি ১৯৯১-১৯৯৩ সালে বিভিন্ন অসহায় শ্রেনী পেশার মানুষের মধ্যে তৎকালীন বরিশাল জেলা প্রশাসক বন্দোবস্ত ব্যবস্থা করে দেন। সে সময় থেকে আমরা সরকারের সেলামি ও খাজনা প্রদান করে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে কুচাইপট্টি ইউনিয়নের কিছু ভাসমান ভূমিদস্যু জোর জবরদস্তি ভোগদখল করে আসছে।
কৃষকদের দাবি, তারা ২০০৮ সাল আগ পর্যন্ত ওই জমিতে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যুরা তাদের জমি দখল করে নেয়।
বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে ক্ষমতা প্রভাব ও প্রতিপত্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে মোঃ আবুল হাশেম বেপারীর ছেলে, কুচাইপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ভূমিদস্যু খোকন (খোকা) বেপারী, যিনি কচাইপট্টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, শরিয়তপুর জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন স্বপন’র ভাই। এই ভূমিদস্যু তার ভাইয়ের ক্ষমতায় আওয়ামী আমলে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত আমাদের প্রায় ৬০০ একর মত জমি ভোগ দখল করেছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে ২৪ এর জুলাই বিপ্লব আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরও স্থানীয় প্রভাবশালী সুমন মৃধা এর কারনে আমরা ভুক্তভোগী কৃষকরা আমাদের স্বীয় জমি ভোগ দখল করতে পারছি না। জমি থেকে প্রায় রাতেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এই প্রভাবশালীরা।
হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া গ্রামের আবুল হাসেম দাবি করেন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি, কিন্তু ১৭ বছরেও কোন সমাধান পাইনি। তার মতে, খোকা বেপারী সাথে কথাবার্তার সময়, রহস্যজনক কারণে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আরেক ভুক্তভোগী কৃষক মোঃ দেলোয়ার হোসেন দাবি করেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবত জমির কাছে যেতে পারিনি। জমির কাছে গেলে আমাদের প্রান নাশের হুমকি দিয়েছে। বর্তমানে খোকা বেপারী জমির কিছু অংশ ছাড়তে চাইলেও স্থানীয় প্রভাবশালী সুমন মৃধা সেই জমি নিজের কব্জায় নিতে চাইছেন।
ভুক্তভোগী কৃষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শাজাহান সরদার, নান্নু খান, সেকান্দার সরদার, রাহেলা বেগম, মন্নান খান সহ অন্যান্যরা। ভুক্তভোগী কৃষকরা তাদের জমি ফিরে পাওয়ার জন্য প্রশাসন ও সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।