বুড়িচং কুমিল্লা প্রতিনিধি। কুমিল্লায় বুড়িচং উপজেলার মোকাম কাকিয়ায় চর এলাকায় ১৪ই জুলাই বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্টেশন কোম্পানি লিমিটেড এর একটি ভিজিলেন্স টিম ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় ১৩ টিসহ মোট ২০টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। খবর পেয়ে অবৈধ সংযোগ প্রধানকারী সিন্ডিকেট প্রধান বিএনপি’র স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুল হক পালিয়ে যায়। তবে বিপদে পড়েছে অর্থের বিনিময় অবৈধ সংযোগ গ্রহণকারী পরিবারগুলো। এসময় অবৈধ ১৩ টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলেও অজ্ঞাত কারণে অবৈধ সংযোগকারীদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয় বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্য ও চিত্রে দেখা যায়, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের কোরপাই কাকিয়ারচর জাতীয় প্রধান ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর পাশে সাদাত জুট মিলস্ সংলগ্ন এলাকায় মোকাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি আব্দুল হক নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বানিজ্য করে আসছে। বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ উক্ত এলাকায় অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পরও আব্দুল হকের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট পুনরায় অবৈধ সংযোগ টেনে নিচ্ছে। এজন্য প্রতিটি সংযোগ থেকে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা করে নিচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক অবৈধ সংযোগকারী জানান, আব্দুল হককে আমরা টাকা দিয়েছি, বিনিময়ে সে আমাদের গ্যাস সংযোগ দিয়েছে।
সুত্র আরো জানায়, স্থানীয় কাকিয়ারচর এলাকার আবিদ আলীর ৪ ছেলে রফিক, মাসুক, মাহফুজ, ইমরান, আব্দুল হক, ওবায়দুল হক, ফজর আলী, রমজান আলীছাড়াও কাকিয়ারচর গ্রামের কমপক্ষে শতাধিক পরিবার আব্দুল হকের দেওয়া অবৈধ সংযোগে প্রতিদিন রান্নাবান্নার কাজ করছে।
একই এলাকায় অন্য বৈধ গ্রাহকরা যেখানে মাস শেষে সরকারী কোষাগারে টাকা পরিশোধ করছে, সেখানে অবৈধ সংযোগ গ্রহণকারীরা কোন বিল পরিশোধ করছে না। উল্লেখ্য কাকিয়ারচর ও আশপাশে কমপক্ষে ২’শতাধিক বৈধ গ্রাহক রয়েছেন বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এর।
স্থানীয় একাধিক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈধ গ্রাহক জানান, তাদের সাথে বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড এর কিছু অসাধূ কর্মচারী ও ঠিকাদারের লোকজন জড়িত রয়েছে। এদিকে সম্প্রতি একটি দৈনিকে কাকিয়ারচরের অবৈধ গ্যাস সংযোগের সংবাদে গত ৩০ জুন ও ১৪ই জুলাই জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাকিয়ারচরএলাকায় অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।
এতে ৩০ জন ৭টি এবং ১৪ ই জুলাই ১৩ টিসহ মোট ২০টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এবিষয়ে আব্দুল হকের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, আমি একা টাকা নেইনি। মামুন কন্ট্রাক্টর (বাখরাবাদের ঠিকাদার) সহ একসাথে সংযোগ দিয়ে টাকা নিয়েছি।
অভিযানের পর স্থানীয় বাখরাবাদ এর গ্রাহকরা প্রশ্ন তুলেছেন, বারবার অবৈধ সংযোগ প্রধানকারীরা মামলা অথবা কোন ধরনের শাস্তিমুলক কোন ব্যবস্থার সম্মুখীন না হওয়ায় অবৈধ এই বাণিজ্য পুনরায় চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত।
এ বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির লিমিটেড এর জনসংযোগ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক বিমল চন্দ্র দেবনাথ অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কাকিয়ায়রচর এলাকায় ২দিনের অভিযানে ২০টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তবে কোন মামলা হয়নি।