ভূরুঙ্গামারী কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি মোঃ জাকারিয়া হোসেন, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের নতুনহাট বাজার এলাকা থেকে ১৪ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। মঙ্গলবার (৬মে) ভোরে ফজরের নামাজের পর তাদের সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় মুসুল্লিরা প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাদের আচরণে সন্দেহ হলে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে রোহিঙ্গাদের আটক করে।
আটককৃতদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ, ৩ জন নারী এবং ৮ জন শিশু ও কিশোর রয়েছে। তারা বাংলা ভাষায় স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে না পারায় সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাদের খাবার ও প্রাথমিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয় এবং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানানো হয়।
সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, “স্থানীয়রা আমাকে খবর দিলে আমি গিয়ে দেখি তারা সবাই অসহায় এবং ভীতসন্ত্রস্ত। কথাবার্তায় বুঝতে পারি তারা রোহিঙ্গা। পরে তাদের খোঁজখবর নিয়ে বিজিবিকে বিষয়টি জানাই।”
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত রোহিঙ্গারা জানান, তারা আগে কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছিলেন। পরে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হন এবং কয়েক বছর কারাভোগ করেন। সাজাভোগ শেষে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাদের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয় বলে তারা দাবি করেন। তবে তারা কীভাবে ভূরুঙ্গামারীর নতুনহাট বাজার এলাকায় এলেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
ঘটনার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম তাদের কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির ভাওয়ালেরকুড়ি ক্যাম্পে হস্তান্তর করেন। সেখানে তাদের প্রাথমিক তদন্ত ও যাচাই-বাছাই চলছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম ২২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাহাবুব-উল হক। তিনি বলেন, “আটক রোহিঙ্গাদের বিজিবির হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তারা কীভাবে এখানে এসেছে, তাদের প্রকৃত পরিচয় ও আগমনপথ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অনুসন্ধান চলছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।”
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আইন অনুযায়ী যাচাই-বাছাই শেষে তাদের প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে ভূরুঙ্গামারীর স্থানীয় জনগণ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন, এবং সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করার দাবি জানান।