ঢাকা , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
গফরগাঁও মদের ডিপোতে মোবাইল কোট পরিচালিত কালীগঞ্জে গরু চোর চক্রের ৭ সদস্য গ্রেপ্তার, চোরাই গরু উদ্ধার সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদারের ইন্তিকালে ড. মাওলানা আব্দুস সামাদের শোক আজও বাবার অপেক্ষায় থাকে শহীদ জসিম উদ্দিনের দুই শিশু সন্তান, স্ত্রীর গর্ভে রেখে যাওয়া শহীদ রনি’র মেয়ে “রোজা” বেড়ে উঠছে বাবাকে ছাড়া ! তুরাবসহ সকল শহিদ আমাদের প্রেরনা- ফয়সল চৌধুরী সিলেট-৬ রাজশাহীর পবায় বিনামূল্যে গাছের চাড়া বিতরণ  নকলায় তারেক জিয়ার প্রজন্ম দলের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ ৫ দিন পর নিখোঁজ সোহাগের লাশ মিলল নদীতে। মনপুরায় পুলিশের অভিযানে ইউপি চেয়ারম্যান সহ আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের ৪ নেতা আটক। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছবি অবমাননার প্রতিবাদে গৌরীপুরে কৃষকদলের বিক্ষোভ সমাবেশ

বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদীতে পানি নেই, শুধু চিক চিক করছে বালু।

বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদীতে পানি নেই, শুধু চিক চিক করছে বালু।

রানা ইসলাম বদরগঞ্জ রংপুর 
শীতকাল বিদায়ের পর  বসন্ত আগমনী। রংপুরের বদরগঞ্জে নদ নদীগুলোতে পানি শূন্য থাকায় শুধু বালু চিক চিক করছে।  কোথাও হাটু পানি, কোথাও ধু-ধু বালু চর, আবার কোথাও বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার। এ চিত্র রংপুর বদরগঞ্জের বুক চিরে বয়ে চলা এক সময়ের প্রমত্তা যমুনেশ্বরি নদীর। যমুনেশ্বরি নদী এখন পানি শুন্য।
পুরোপুরি শুস্ক মৌসুম না আসতেই নদীতে কোন পানি নেই। জেগে ওঠেছে চর। এককালে এ নদী অনেক খরস্রোতা ছিল। কিন্তু কালের আবর্তে তা বিলিন হতে চলেছে। শুকিয়ে যাওয়া নদীতে চাষিরা ফসল আবাদ করছেন। নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই পাড়ের অসংখ্য মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে জেলে পরিবারের দুঃখ দূর্দশা চরমে পৌঁছেছে। যমুনেশ্বরি নদীর পানি প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য ড্রেজিং না করার কারণে নদী যেমন তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে অন্যদিকে নদী তার নাব্যতা হারিয়েছে।
এক সময়ে এই যমুনেশ্বরি নদীতে বড় বড় নৌকা আর ইঞ্জিনচালিত নৌকা পারাপারের জন্য প্রচলন ছিল। এখন তা সূদুর অতীত। কোথাও কোথাও পানি না থাকায় লোকজন পায়ে হেঁটেই পার হচ্ছে আবার কোথাও হাঁটু পানিতেই লোকজন পারাপার করছে। যেখানে কিছুটা পানি আছে সেখানে বাশেঁর সাঁকো নির্মাণ করে চলছে পারাপারের কাজ। যমুনেশ্বরি নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট। নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পুরোপুরি শুস্ক মৌসুম আসার আগেই টিউবওয়েলের পানি ওঠা কমে গেছে।
দামোদরপুর ইউনিয়ন চম্পাতলী এলাকায় তছির উদ্দিন নামে এক কৃষক বলেন, আমাদের পাশের নদীর নাম চিকলী। নদীতে পানি না থাকায় আমাদের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।গ্রামের ছেলেরা  ছেলেরা নদীতে পানি না থাকায় আনন্দ হৈ চৈ করতে পারছে না।
মধুপুর ইউনিয়ন নাওপাড়া গ্রামে মনা ইসলাম বলেন,আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গেছে যমুনা নদী।নদীতে পানি না থাকায় বালু খেকোদের জন্য ভালো হয়েছে। তারা  দিনে রাতে বালুতুলে বিক্রি করছেন।প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছেন।
নদীর তীরবর্তী এলাকার লোহানী পাড়া ইউনিয়নের মাধাই খামার গ্রামের বাসিন্দা আনারুল মিয়া জানান; নদীতে পানি না থাকায় আমাদের খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ফসলের ক্ষেত খামারে পানির স্বল্পতা দেখা দেয়ায় আবাদ ঠিকমতো হচ্ছে না।
বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম জানান; যমুনেশ্বরি নদীর পানি শুকিয়ে যাবার কারণে পরিবেশ ও জীববৈচিত্রে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। আগামিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রুপ ধারণ করবে বলে মনে করেন তিনি। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, শুস্ক মৌসুমে যমুনেশ্বরি নদীর উৎস মুখে পলি পড়তে শুরু করে। কিন্তু খনন কাজ না করা সহ অব্যবস্থাপনার কারণে দিনদিন শুকিয়ে যাচ্ছে নদী। এই সুযোগ অবৈধ দখলদাররা নদী দখলের মহৎসবে মেতে উঠেছে। গত( ১৩ই -ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার বদরগঞ্জ উপজেলা সাবেক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা(উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কণক চন্দ্র রায়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নদী খনন না করার কারণে নদীতে পলি জমে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে।
কৃষকরা ভূ-গর্ভস্থ পানি অতিরিক্ত ব্যবহারে পানির স্তর নিম্নমূখি হচ্ছে। এমতবস্থায় নদী তীরবর্তী ইরি বোরো আবাদ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

গফরগাঁও মদের ডিপোতে মোবাইল কোট পরিচালিত

বদরগঞ্জে যমুনেশ্বরী নদীতে পানি নেই, শুধু চিক চিক করছে বালু।

আপডেট সময় ০৪:৪৮:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
রানা ইসলাম বদরগঞ্জ রংপুর 
শীতকাল বিদায়ের পর  বসন্ত আগমনী। রংপুরের বদরগঞ্জে নদ নদীগুলোতে পানি শূন্য থাকায় শুধু বালু চিক চিক করছে।  কোথাও হাটু পানি, কোথাও ধু-ধু বালু চর, আবার কোথাও বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার। এ চিত্র রংপুর বদরগঞ্জের বুক চিরে বয়ে চলা এক সময়ের প্রমত্তা যমুনেশ্বরি নদীর। যমুনেশ্বরি নদী এখন পানি শুন্য।
পুরোপুরি শুস্ক মৌসুম না আসতেই নদীতে কোন পানি নেই। জেগে ওঠেছে চর। এককালে এ নদী অনেক খরস্রোতা ছিল। কিন্তু কালের আবর্তে তা বিলিন হতে চলেছে। শুকিয়ে যাওয়া নদীতে চাষিরা ফসল আবাদ করছেন। নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুই পাড়ের অসংখ্য মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে জেলে পরিবারের দুঃখ দূর্দশা চরমে পৌঁছেছে। যমুনেশ্বরি নদীর পানি প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য ড্রেজিং না করার কারণে নদী যেমন তার গতিপথ পরিবর্তন করেছে অন্যদিকে নদী তার নাব্যতা হারিয়েছে।
এক সময়ে এই যমুনেশ্বরি নদীতে বড় বড় নৌকা আর ইঞ্জিনচালিত নৌকা পারাপারের জন্য প্রচলন ছিল। এখন তা সূদুর অতীত। কোথাও কোথাও পানি না থাকায় লোকজন পায়ে হেঁটেই পার হচ্ছে আবার কোথাও হাঁটু পানিতেই লোকজন পারাপার করছে। যেখানে কিছুটা পানি আছে সেখানে বাশেঁর সাঁকো নির্মাণ করে চলছে পারাপারের কাজ। যমুনেশ্বরি নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট। নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে পুরোপুরি শুস্ক মৌসুম আসার আগেই টিউবওয়েলের পানি ওঠা কমে গেছে।
দামোদরপুর ইউনিয়ন চম্পাতলী এলাকায় তছির উদ্দিন নামে এক কৃষক বলেন, আমাদের পাশের নদীর নাম চিকলী। নদীতে পানি না থাকায় আমাদের চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।গ্রামের ছেলেরা  ছেলেরা নদীতে পানি না থাকায় আনন্দ হৈ চৈ করতে পারছে না।
মধুপুর ইউনিয়ন নাওপাড়া গ্রামে মনা ইসলাম বলেন,আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে চলে গেছে যমুনা নদী।নদীতে পানি না থাকায় বালু খেকোদের জন্য ভালো হয়েছে। তারা  দিনে রাতে বালুতুলে বিক্রি করছেন।প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছেন।
নদীর তীরবর্তী এলাকার লোহানী পাড়া ইউনিয়নের মাধাই খামার গ্রামের বাসিন্দা আনারুল মিয়া জানান; নদীতে পানি না থাকায় আমাদের খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। ফসলের ক্ষেত খামারে পানির স্বল্পতা দেখা দেয়ায় আবাদ ঠিকমতো হচ্ছে না।
বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম জানান; যমুনেশ্বরি নদীর পানি শুকিয়ে যাবার কারণে পরিবেশ ও জীববৈচিত্রে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। আগামিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রুপ ধারণ করবে বলে মনে করেন তিনি। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, শুস্ক মৌসুমে যমুনেশ্বরি নদীর উৎস মুখে পলি পড়তে শুরু করে। কিন্তু খনন কাজ না করা সহ অব্যবস্থাপনার কারণে দিনদিন শুকিয়ে যাচ্ছে নদী। এই সুযোগ অবৈধ দখলদাররা নদী দখলের মহৎসবে মেতে উঠেছে। গত( ১৩ই -ফেব্রুয়ারি) বৃহস্পতিবার বদরগঞ্জ উপজেলা সাবেক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা(উদ্ভিদ সংরক্ষণ) কণক চন্দ্র রায়ের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নদী খনন না করার কারণে নদীতে পলি জমে নদী শুকিয়ে যাচ্ছে।
কৃষকরা ভূ-গর্ভস্থ পানি অতিরিক্ত ব্যবহারে পানির স্তর নিম্নমূখি হচ্ছে। এমতবস্থায় নদী তীরবর্তী ইরি বোরো আবাদ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।