মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী নগরীতে ধানের জমিতে হাঁস যাওয়াকে কেন্দ্র করে মোমিন হত্যা মামলার আসামী সৎ ভাই মেহেদী (২৪) ও চাচি পারভিনকে (৪০) গ্রেফতার করেছে র্যাব। নিহত আমিরুল মোমিন (৪০), তিনি আরএমপি দামকুড়া থানার আলিমগঞ্জ গ্রামের আলহাজ মোঃ সিরাজুল করিমের ছেলে এবং পেশায় একজন কৃষক ছিলেন। শনিবার (২৬ জুলাই) ভোর পৌনে ৭টায় নগরীর পবা থানাধীন কয়রা গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, আসামী মোঃ মেহেদী (২৪), দামকুড়া থানার আলিমগঞ্জ গ্রামের মিজানুর রহমান মিজুর ছেলে ও মোসাঃ পারভিনকে (৪০), তিনি মিজুর স্ত্রী। শনিবার দুপুরে র্যাব-৫, রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব জানায়, আসামী মোঃ মিজানুর রহমান ওরফে মিজু (৫০), নিহতের সৎ ভাই। তাদের মধ্যে পূর্ব থেকেই শত্রুতা ছিল। আসামীর মিজুর তার সৎ ভাইয়ের বাড়ির পাশে ১০ কাঠা জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করা ছিল। গত (২১ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টায় নিহত মোমিনের বাড়ির ২টি পাতিহাঁস আসামী মিজানুরের জমিতে ধানের চারা নষ্ট করাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া বিবাদ হয়। এরই জেরে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকাল ৪টার দিকে মামলার ১নং আসামী রয়েলের উস্কানিতে মিজানুর সহ ১০/১১ জন দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মোমিন বাড়ির সামনে গিয়ে তাকে উদ্দেশ্যে করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
ওই সময় মোমিন এবং তার ভাই খবর পেয়ে বিকাল সোয়া ৫টায় বাড়ির সামনে উপস্থি হলে আসামী রয়েল হাসুয়া দিয়ে মোমিনের ঘাড়ে কোপ মারে। এতে সে গুরুতর জখম হয় এবং প্রাণে বাঁচতে বাড়ির ভিতরে গিয়ে দরজা আটকে দেয়। কিন্তু আসামীরা বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করে মোমিন সহ তার ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ঘটনাস্থাল ত্যাগ করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মোমিন এবং তার ভাইকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্ত্বব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা- নিরীক্ষা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে মোমিনকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে নগরীর দামকুড়া থানায় ৭জনকে এজাহারনামীয় ও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-১০/৭১, তারিখ ২৫/০৭/২০২৫। মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যে শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল পৌনে ৭টায় নগরীর পবা থানাধীন কয়রা গ্রামে জনৈক মোঃ মতিউর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আসামী মোঃ মেহেদী (২৪), ও তার মা মোসাঃ পারভিনকে (৪০), হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। শনিবার সকালে গ্রেফতারকৃতদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে দামকুড়া থানা পুলিশ।