নিজস্ব প্রতিবেদক- চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ ১১ টুকরো করার প্রধান আসামী স্বামী সুমন’কে র্যাব-৯ ও র্যাব-৭ এর যৌথ অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে মাদক উদ্ধার, হত্যা মামলা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারেক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়াও যে কোন ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
গত ০৯ জুলাই ২০২৫ইং তারিখে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ফ্ল্যাট বাসার ভেতরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে নিজ স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ ১১ টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে গুম করার চেষ্টা করে ঘাতক স্বামী। পরবর্তীতে সিকিউরিটি গার্ড মশিউর রহমান ফ্ল্যাট বাসা থেকে দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক নড়াচড়া এবং পানির ফ্লাসের শব্দ শুনে ১০ম তলায় ঘাতক সুমনের ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করলে প্রায় ৩০ মিনিটি পর সুমন বাসার দরজা খুলে এবং বাসায় অস্বাভাবিক নড়াচড়ার ও পানির শব্দের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সুমন এলোমেলো কথাবার্তা বলে ও তাকে বাসায় প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করে।
সিকিউরিটি গার্ড মশিউর রহমান জোর পূর্বক সুমনের বাসায় ঢুকে রুমের বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ, বাথরুমের ভিতরে রক্তমাখা কাপড় এবং কমোডে মাংস দেখতে পেয়ে বাসা বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে স্থানীয়দের সহায়তার জন্য নিচে গেলে ঘাতক সুমন কৌশলে বাসার গ্রীল ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সিকিউরিটি গার্ড মশিউর এবং স্থানীয় লোকজন বায়েজিদ থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত ভিকটিমের ক্ষত-বিক্ষত শরীরের অংশ বিশেষ এবং রুমের খাটের নিচ হতে ভিকটিমের পায়ের অংশ উদ্ধার করে।
উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন রুবেল বাদী হয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২০, তারিখ ১০ জুলাই ২০২৫ইং, ধারাঃ-৩০২/২০১ পেনাল কোড ১৮৬০। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে ব্যাপক আলোচিত হয়। উক্ত হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র্যাব এর গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত রাতে র্যাব-৯, সিপিসি-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর যৌথ আভিযানিক দল ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার বিজয়নগর থানাধীন ফুলবাড়িয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত হত্যাকান্ডের মূল আসামী মোঃ সুমন (৩৫), পিতা- মোঃ সুন্দর আলী, সাং- সুয়াগাজী, থানা- সদর দক্ষিন, জেলা- কুমিল্লা’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব-৯ এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।