ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফ্যাসিবাদের দোসর আ. লীগ নেতা ই লার্নিং এর মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুব উন্নয়নের পরিচালক হামিদ খান মির্জাগঞ্জ মাজারের হিসাবরক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে ফের উত্তাল জনমত ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি এর পরেই বাবার মৃত্যু। নালিতাবাড়ীতে ভোগাই নদী থেকে সিএনজি চালকের মরদেহ উদ্ধার সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল মিডফোর্ট হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দলীয় ইস্তেহার প্রকাশ করা হয়েছে -মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। নেছারাবাদের চিলতলা বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের পাসে দাড়িয়েছে সবুজ বাংলা স্পোর্টিং ক্লাব। গাজীপুরে বিএনপি’র ৫ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা: গ্রেফতার ১ ১৮ শিক্ষক, পাস মাত্র ৩ শিক্ষার্থী-হরিপুর আদর্শ বিদ্যালয়ে প্রশ্ন উঠছে ব্যবস্থাপনায় পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে শিশুর প্রাণহানি।

গৌরীপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন, অকৃতকার্য প্রায় অর্ধেক!

গৌরীপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন, অকৃতকার্য প্রায় অর্ধেক!

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায় চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন। অকৃতকার্য হয়েছে, প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফলাফল পর্যালোচনায় এ চিত্র উঠে এসেছে। ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক পরীক্ষায় হাতেগোনা ১৩টি প্রতিষ্ঠান জিপিএ-৫ পেয়েছে।

পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৩৪টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি বিদ্যালয়ের পাশের হার ৫০ শতাংশের কম। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় ১৬টি মাদ্রাসার মধ্যে ৫টি মাদ্রাসার ফলাফল অর্ধেকের কম পাস করেছে। কারিগরি ৬টি প্রতিষ্ঠানের ফলাফলে সর্বনিম্ন পাসের হার ৫৯.০৯ শতাংশ।

ফলাফল পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন গৌরীপুর উপজেলার ৩৪টি বিদ্যালয় থেকে ৩৩৫৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলো, যার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৭ জন, ১৮১৭ জন কৃতকার্য হয়েছে, যার শতকরা হার ৫৪.১৭। অকৃতকার্য হয়েছে ১৫৩৭ জন, শতকরা হার – ৪৫.৮৩।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উপজেলায় ১৬টি মাদ্রাসায় ৪২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ২২০ জন, জিপিএ পেয়েছে ১৩জন, শতকরা হার ৫১.৫২, অকৃতকার্য হয়েছে ২০৭ জন, অকৃতকার্যের শতকরা হার ৪৮.৪৮।

কারিগরি ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬৯৩ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে কৃতকার্য হয়েছে ৫৪১ জন, জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৩জন, শতকরা পাসের হার ৭৮.০৬, অকৃতকার্য হয়েছে ১৫২ জন, যার শতকরা হার ২১.৯৪।

উপজেলার অগ্রদূত নিকেতন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, রামগোপালপুর জিকেপি উচ্চ বিদ্যালয়, লালখান উচ্চ বিদ্যালয়, পাছার উচ্চ বিদ্যালয়, গিধাউষা হাসন আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয়, মোজাফফর আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, চান্দের সাটিয়া মডেল স্কুল, খলতবাড়ি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ ২০টি বিদ্যালয়ের ফলাফল ৪০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।

শিক্ষক-অভিভাবক মহল বলছেন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগের অভাব, নিয়মিত ক্লাস না করা, পর্যাপ্ত গাইডলাইন ও অনুশীলনের ঘাটতি এবং প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি এই ফলাফলের পেছনে বড় কারণ।

স্থানীয় এক শিক্ষার্থী জানান, “আমরা ঠিকভাবে পড়াশোনায় ফিরে আসতে পারিনি, দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় ঘাটতি হয়েছে। তাছাড়া, সঠিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতির নিতে পারিনি।”

অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, এখনই প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারলে আগামীতে শিক্ষার মান আরও নিচে নেমে যেতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন করে বিনিয়োগ ও মনোযোগ না দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিপদের মুখে পড়বে—এমনটাই আশঙ্কা অভিজ্ঞ মহলের।


গৌরীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, “ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় পাসের হার ৯০ শতাংশে উন্নীত করা ও মানোন্নয়নের জন্য শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি করা, নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ করা, শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উদ্যোগ, পাঠোভ্যাস তৈরি করে বই পড়ার দিকে মনোযোগী করে গড়ে তোলার কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

ফ্যাসিবাদের দোসর আ. লীগ নেতা ই লার্নিং এর মাসুদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুব উন্নয়নের পরিচালক হামিদ খান

গৌরীপুরে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন, অকৃতকার্য প্রায় অর্ধেক!

আপডেট সময় ১২:০৯:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায় চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৪৩ জন। অকৃতকার্য হয়েছে, প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফলাফল পর্যালোচনায় এ চিত্র উঠে এসেছে। ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মাধ্যমিক পরীক্ষায় হাতেগোনা ১৩টি প্রতিষ্ঠান জিপিএ-৫ পেয়েছে।

পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৩৪টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০টি বিদ্যালয়ের পাশের হার ৫০ শতাংশের কম। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষায় ১৬টি মাদ্রাসার মধ্যে ৫টি মাদ্রাসার ফলাফল অর্ধেকের কম পাস করেছে। কারিগরি ৬টি প্রতিষ্ঠানের ফলাফলে সর্বনিম্ন পাসের হার ৫৯.০৯ শতাংশ।

ফলাফল পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন গৌরীপুর উপজেলার ৩৪টি বিদ্যালয় থেকে ৩৩৫৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলো, যার মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৭ জন, ১৮১৭ জন কৃতকার্য হয়েছে, যার শতকরা হার ৫৪.১৭। অকৃতকার্য হয়েছে ১৫৩৭ জন, শতকরা হার – ৪৫.৮৩।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে উপজেলায় ১৬টি মাদ্রাসায় ৪২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ২২০ জন, জিপিএ পেয়েছে ১৩জন, শতকরা হার ৫১.৫২, অকৃতকার্য হয়েছে ২০৭ জন, অকৃতকার্যের শতকরা হার ৪৮.৪৮।

কারিগরি ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬৯৩ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে কৃতকার্য হয়েছে ৫৪১ জন, জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৩জন, শতকরা পাসের হার ৭৮.০৬, অকৃতকার্য হয়েছে ১৫২ জন, যার শতকরা হার ২১.৯৪।

উপজেলার অগ্রদূত নিকেতন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, রামগোপালপুর জিকেপি উচ্চ বিদ্যালয়, লালখান উচ্চ বিদ্যালয়, পাছার উচ্চ বিদ্যালয়, গিধাউষা হাসন আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয়, মোজাফফর আলী ফকির উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, চান্দের সাটিয়া মডেল স্কুল, খলতবাড়ি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়সহ ২০টি বিদ্যালয়ের ফলাফল ৪০ শতাংশের নিচে নেমে গেছে।

শিক্ষক-অভিভাবক মহল বলছেন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি মনোযোগের অভাব, নিয়মিত ক্লাস না করা, পর্যাপ্ত গাইডলাইন ও অনুশীলনের ঘাটতি এবং প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি এই ফলাফলের পেছনে বড় কারণ।

স্থানীয় এক শিক্ষার্থী জানান, “আমরা ঠিকভাবে পড়াশোনায় ফিরে আসতে পারিনি, দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পড়াশোনায় ঘাটতি হয়েছে। তাছাড়া, সঠিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতির নিতে পারিনি।”

অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম বলেন, এখনই প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে না পারলে আগামীতে শিক্ষার মান আরও নিচে নেমে যেতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন করে বিনিয়োগ ও মনোযোগ না দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিপদের মুখে পড়বে—এমনটাই আশঙ্কা অভিজ্ঞ মহলের।


গৌরীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহাদত হোসেন বলেন, “ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে পৃথকভাবে মূল্যায়ন করা হবে। আগামী শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় পাসের হার ৯০ শতাংশে উন্নীত করা ও মানোন্নয়নের জন্য শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি করা, নিয়মিত অভিভাবক সমাবেশ করা, শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি কমানোর উদ্যোগ, পাঠোভ্যাস তৈরি করে বই পড়ার দিকে মনোযোগী করে গড়ে তোলার কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।