মোঃ আবদুল্লাহ বুড়িচং প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার হরিপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল শিক্ষাঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিদ্যালয় থেকে অংশ নেওয়া ১৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ৩ জন। পাসের হার মাত্র ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অথচ প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শিক্ষক রয়েছেন ১৮ জন।
বিদ্যালয়টি উপজেলার সদর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে অবস্থিত। দীর্ঘদিনের শিক্ষা ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়ের এমন ফলাফলে এলাকাবাসী, অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
জরুইন গ্রামের বাসিন্দা ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. আবুল কালাম আজাদ সুজন বলেন, একসময় এই বিদ্যালয়ের রেজাল্ট ছিল গর্বের বিষয়। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক দখল, কমিটিতে অনিয়ম আর নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে প্রতিষ্ঠানটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কাশেম ফলাফল খারাপ হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার প্রতি মনোযোগের ঘাটতি, করোনাকালীন পড়াশোনায় ব্যাঘাত, অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং শিক্ষকদের কিছু দুর্বলতাকে দায়ী করেন।
এছাড়াও বন্যা ও কনোনা ভাইরাসের কারনে ছেলে মেয়েরা ভালোভাবে পড়া লেখা করতে পারে নাই। তিনি বলেন, আমরা এরইমধ্যে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। ভবিষ্যতে ভালো ফলাফলের জন্য প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করেছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বুড়িচং উপজেলার ৪০টি বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ২ হাজার ৯৭৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ২ হাজার ২৩ জন এবং ১৮০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গড় পাসের হার ৬৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সেই তুলনায় হরিপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ফলাফল ছিল উপজেলা পর্যায়ে সর্বনিম্ন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিভিন্ন কারণে ফল খারাপ হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করছি।
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তানভীর হোসেন বলেন, ফলাফল বিপর্যয়ের পেছনের সুনির্দিষ্ট কারণগুলো খতিয়ে দেখা হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবি, বিদ্যালয়ের বর্তমান অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।