মামুন জমাদার হিজলা প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলা শাখা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এবং হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন নপ্তির মায়ের নামে রেজিস্ট্রি করা জমি দখলের চেষ্টা করেছেন সালাম বেপারী নামের এক আওয়ামী ভূমিদস্যু। ভুক্তভোগী এবং তার পরিবারের অভিযোগ, গত একুশে জুন, শনিবার রাত আনুমানিক ১০টায় ঢাকার সাভার থানার তেতুলজোড়া ইউনিয়নের জয়না বাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলার পূর্ব কোড়ালিয়া গ্রামের গৃহিণী ওয়াহেদা বেগম জানান, তার স্বামী মাহাতাব উদ্দিন নপ্তি জীবিত থাকাকালীন ২০০৬ সালে সাভার জয়না বাড়ি এলাকার জামুর মৌজার ৩৮৫ নম্বর দাগের পাঁচ শতাংশ জমি তার নামে ক্রয় করেছিলেন।
এ বিষয়ে তার ছেলে, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও হিজলা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মনির হোসেন নপ্তি অভিযোগ করেন, সাভার থানার জয়না বাড়ি গ্রামের আব্দুর রব বেপারীর ছেলে আব্দুস সালাম বেপারী ও রাজু বেপারী চিহ্নিত ভূমিদস্যু, যারা দীর্ঘ আওয়ামী শাসনামলে এই এলাকায় বহু মানুষের জমি অবৈধভাবে দখল করেছে।
তারা অন্য কোন অঞ্চল থেকে আসা মানুষের কেনা জমি টার্গেট করে, রাতের আঁধারে বাউন্ডারি দিয়ে নিজের জমি দাবি করে। তৎকালীন অবৈধ আওয়ামী ফ্যাসিবাদি সরকারের প্রশাসনকে ব্যবহার করে জমির প্রকৃত মালিকদের চাপ দিত। অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে জমির দলিল দিতে বাধ্য করা হতো, না দিলে জমির মালিকদের আর জমিটি ভোগ করতে দেয়া হতো না।
৫ই আগস্ট অবৈধ হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর কিছুদিন আত্মগোপনে ছিল সালাম বেপারী এবং তার পরিবার। বর্তমানে, স্থানীয় কিছু বিএনপি’র লোকজনের ছত্রছায়ায় ফিরে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায়, একুশে জুন সালাম বেপারী তাদের জমি দখলের চেষ্টা করে। পাঁচ শতাংশ জমির এক শতাংশের মধ্যে বাউন্ডারি দিয়ে জমির মালিকানা দাবি করে।
বিষয়টি জানতে পেয়ে, ভুক্তভোগী পরিবার ২২ই জুন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। বাউন্ডারি নির্মাণে বাধা দিলে উল্টো সালাম বেপারী পুলিশ ডেকে আনে।
স্থানীয় ৬০ বছর বয়সী বৃদ্ধ করম আলী জানান, “সালাম বেপারী এবং তার ভাইয়েরা অন্যের জমি জোরজবরদস্তি এবং প্রতারণার মাধ্যমে দখল করে থাকে।” তিনি আরও জানান, “বরিশালের এই পরিবারটি আমার বাবার কাছ থেকে বহু বছর পূর্বে জমিটি ক্রয় করে এবং বাউন্ডারি দিয়ে রেখেছিল। এখন সালাম বেপারী এসে জমির মধ্যে এক শতাংশ জমি দাবি করছে এবং দোকানঘর নির্মাণের চেষ্টা করছে।”
ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার থানার এসআই রশিদের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেছি। যতটুকু বুঝতে পেরেছি, জমির মালিক বরিশালের ওই পরিবারই। তবে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার কথা বলেছেন স্থানীয় যুবদল নেতা রাজু। উভয়পক্ষ তাদের নিজস্ব কাগজপত্র নিয়ে বসলে আমি সেখানে উপস্থিত থাকবো, এবং ভুক্তভোগী পরিবার যেন ন্যায্যবিচার পায়, তেমনটাই হবে আমাদের কাম্য।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাম বেপারীর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।