তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জে বেকার তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে চারটি ভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে কালীগঞ্জ পৌরসভা।
সেলাই, হস্তশিল্প, বিউটিফিকেশন ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মোট ৯০ জন তরুণ-তরুণী নিজেদের দক্ষ করে তুলেছেন। প্রশিক্ষণ শেষে তারা প্রত্যেকে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বেকার যুবসমাজের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এসেছে আত্মমর্যাদা ও স্বপ্ন দেখার সাহস।
জানা গেছে, পৌর অডিটোরিয়ামে ১৫ দিনব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণে অংশ নেন পৌর এলাকার ২০ জন তরুণী। এছাড়াও ৩০ জন তরুণীকে নিয়ে ৭ দিনের একটি হস্তশিল্প প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। ২০ জন তরুণীকে নিয়ে ১৫ দিনের বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষণ ও আরো ২০ জনকে নিয়ে এক মাসব্যাপী কম্পিউটার প্রশিক্ষণও সম্পন্ন হয়েছে।
ভাদার্ত্তী গ্রামের ইমন বলেন, “কম্পিউটার প্রশিক্ষণ শেষে আমি এখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে এগোচ্ছি। আগে কিছুই জানতাম না, এখন নিজের একটা ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি।”
৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভাতগাতি গ্রামের সুস্মিতা আক্তার জানান, “সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে আমি ছোট পরিসরে কাপড় তৈরি শুরু করেছি। এখন স্বপ্ন দেখি নিজস্ব একটি বুটিক হাউজ গড়ার।”
৫ নম্বর ওয়ার্ডের বালীগাঁও গ্রামের শিউলি আক্তার বলেন, “হস্তশিল্প প্রশিক্ষণে হাতে কাজ শিখেছি। এখন বাসায় বসে পণ্য তৈরি করছি, অর্ডারও পাচ্ছি।”
মুনশুরপুর গ্রামের হাবিবা আক্তার বলেন, “বিউটিফিকেশন কোর্সটি আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এখন আমি একটি পার্লারে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতে নিজেই একটি বিউটি পার্লার চালু করতে চাই।”
প্রশিক্ষণের বিষয়ে কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাসুদুজ্জামান বলেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে আমরা বিভিন্ন ট্রেডে বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি।”
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু প্রশিক্ষণ নয়, বরং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের উদ্যোক্তা হবার সুযোগ তৈরি করা। এজন্য আমরা ব্যাংক ঋণ, অনুদান ও বাজার সংযোগের দিকেও নজর দিচ্ছি।” প্রশিক্ষণের আত্মপ্রান্ত নিয়ে কথা হয় কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তনিমা আফ্রাদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, “তরুণরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের কর্মমুখী করে গড়ে তুলতে এই প্রশিক্ষণের উদ্যোগ। আমরা চাই, তারা যেন হাত পেতে না, বরং নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পদে পরিণত হয়।”
তিনি আরো বলেন, “আগামীতে প্রশিক্ষণের পরিধি আরও বাড়ানো হবে এবং প্রতিটি ট্রেডে তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা পাশে থাকবো।”