টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী প্রেসক্লাবের অভিজ্ঞ ও বহুমাত্রিক গুণে গুণান্বিত সাংবাদিক মিহির ভৌমিক আর নেই। দীর্ঘদিন কিডনি জটিলতায় ভোগার পর ১২ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৮টা ১৫ মিনিটে তিনি টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, তিন ভাই ও দুই বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ে তিনি ছিলেন দায়িত্বশীল, নীতিবান এবং সমাজসচেতন। সাপ্তাহিক মৌ বাজার ও দৈনিক একুশে বাণী পত্রিকায় তিনি নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করে গেছেন বছরের পর বছর। কালিহাতী প্রেসক্লাবের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে তিনি দুবার কোষাধ্যক্ষ এবং একবার সহ-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
সাংবাদিকতার এই পথচলায় মিহির ভৌমিকের হাত ধরেছিলেন ২০০২ সালে, যুগান্তর পত্রিকার কালিহাতী উপজেলা প্রতিনিধি তারেক আহমেদ-এর সঙ্গে। দুজনেই শুরু করেছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক শাহ আলম-এর উৎসাহ ও দিকনির্দেশনায়। সেই সময়ের সেই সাহসী জুটি আজ বিচ্ছিন্ন হলো এক অপূরণীয় শূন্যতার মাধ্যমে।
মিহির ভৌমিক শুধু সাংবাদিকই ছিলেন না—তিনি ছিলেন, একজন নাট্যকার, মঞ্চ অভিনেতা এবং সংস্কৃতিমনা মানুষ। তাঁর বিনয়, মেধা ও আন্তরিকতা তাঁকে করে তুলেছিল সকলের আপনজন।
সংবাদপত্র, নাট্যমঞ্চ কিংবা সামাজিক পরিসর—সব জায়গাতেই তিনি ছিলেন এক শান্ত স্বরে উচ্চারিত দৃঢ়তার প্রতীক।
তাঁর মৃত্যুতে কালিহাতীর সাংবাদিক সমাজসহ সর্বস্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সহকর্মীরা হারিয়েছেন এক পথপ্রদর্শক, এলাকাবাসী হারিয়েছে এক আপনজন।
কালিহাতী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক শাহ আলম মরহুমের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং বলেন। মিহির ভৌমিক শুধু একজন সহকর্মী ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু, একজন সৎ মানুষ। তাঁর মতো মানুষ এ সমাজে বিরল। তাঁর এই চলে যাওয়া আমাদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
শাহ আলম আরও বলেন, আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি রইল গভীর সমবেদনা।