নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জের বন্দরে চাঞ্চল্যকর রাজিব হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রধান আসামি আয়াত ও সিফাত কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
বাংলাদেশ আমার অহংকার- এই স্লোগান নিয়ে র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র, মাদক উদ্ধার, চাঞ্চল্যকর হত্যা এবং বিভিন্ন আলোচিত অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে র্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১ গত ০৫ আগষ্ট ২০২৪ তারিখ হতে অদ্যবধি দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন অভিযানে চাঞ্চল্যকর অপরাধী ৯২ জন, আরসা সদস্য-১৫ জন, হত্যা মামলায় ১১৫ জন গ্রেফতার, ধর্ষণ মামলায় ৫১ জন গ্রেফতার, অস্ত্র সংক্রান্ত মামলায় ১৬ জন গ্রেফতারসহ ৮৫ টি অস্ত্র, ১২৮৫ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার এবং ২৮৪ জন এর অধিক মাদক কারবারি গ্রেফতারসহ বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করে র্যাব-১১।
পাশাপাশি ৪৪ জন অপহরণকারী গ্রেফতারসহ ৩৮ জন ভিকটিম উদ্ধার, এবং ছিনতাইকারী ও ডাকাত ৫৫ জন, জেল পলাতক ৩৬ জনসহ অন্যান্য অপরাধী প্রায় ২৮০ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব-১১ জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। গত ০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ইং তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ০৬:৫৫ ঘটিকার সময় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার ছোটবাগ এলাকায় রাজিব হোসেন জয় নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত রাজিব হোসেন জয় (৩৪) নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানার দেওয়ানবাগ পূর্ব পাড়ার হোসেন মাতবরের ছোট ছেলে। সে গার্মেন্টসে চাকুরি করত।
মামলার সূত্রে জানা যায় যে, একই গ্রামের মোস্তফার ছেলে আয়াত ও সিফাত, মৃত রমজানের ছেলে মিরাজ, জাহাঙ্গীরের ছেলে মেহেদী ও চাঁনপর গ্রামের আব্দুল মতিন @ কানা মতিনের ছেলে জীবন সহ অন্যান্য বিবাদীদের সাথে ভিকটিম রাজিবের সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ সহ শত্রæতা চলে আসছিল।
ঘটনার দিন ০৯ অক্টবর, ২০২৪ইং তারিখ ভিকটিম মোঃ রাজিব হোসেন জয় (৩৪) মদনপুর বাজার হতে রিক্সা যোগে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে ছোটবাগ গ্রামে সমাজ বিজ্ঞান বিল্ডিং এর সামনে রাস্তায় পৌছলে মেহেদী ও নিলয় ভিকটিমকে ফোন করে ছোটবাগ জনৈক হযরত আলীর বসত বাড়ির সামনে রাস্তায় গিয়ে তাদের সাথে দেখা করতে বলে।
তাদের কথামত ভিকটিম রিক্সা যোগে সন্ধ্যা অনুমান ০৬:৫৫ ঘটিকার সময় বন্দর থানাধীন ছোটবাগ সাকিনস্থ জনৈক হযরত আলীর বসত বাড়ির সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌছলে পূর্ব হতে ঘটনাস্থলে ওৎ পেতে থাকা সকল বিবাদীগন তাদের পূর্ব- পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভিকটিমের চলার পথ আটকিয়ে রিক্সা হতে জোর পূর্বক রাস্তায় নামিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে একে-অপরের সহায়তায় তাদের থাকা চাকু, সুইজ গিয়ার, চাইনিজ কুড়াল, রামদা দিয়ে তাকে এলোপাথারি কুপিয়ে ও ঘাই মেরে বুকের ডান পাশের উপরের অংশে ছিদ্র যুক্ত জখম করে, ডান হাতের পেশিতে কাটা জখম করে, বাম হাতের পেশিতে কাটা রক্তাক্ত জখম করে। কপালে কাটা রক্তাক্ত জখম করতঃ রাস্তার পাশে থাকা ইট দিয়ে ভিকটিমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করিয়া মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং যে যার মত বীরদর্পে চলে যায়। এরই প্রেক্ষিতে নিহত ভিকটিম রাজিব হোসেন জয় এর পিতা বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই নৃশংস হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত আসামিদেরকে গ্রেফতারের জন্যে র্যাব-১১ গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা নজরদারি তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিএসসি, আদমজীনগর, নারায়ণগঞ্জ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ১৭ মে, ২০২৫ ইং তারিখ নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন ফতুল্লা রেল স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অত্র মামলার এজাহার নামীয় আসামি আয়াত (২৮) ও সিফাত (২৩), উভয় পিতা-মোস্তফা, স্থায়ী সাং-ছোটবাগ, থানা-বন্দর, জেলা-নারায়ণগঞ্জদ্বয়‘কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।