শাহিদুল ইসলাম , কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি ঃ খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রার আমাদী ইউনিয়নের মসজিদকুড় গ্রামে এক নিঃসঙ্গ ব্যবসায়ীর বাড়িতে গভীর রাতে দুস্কৃতিকারীদের হানা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার (৬ মে) গভীর রাতে মুখোশধারী তিন-চারজনের একটি দল রুহুল কুদ্দুস সরদারের বাড়িতে প্রবেশ করে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, সংঘবদ্ধ এই চক্র অস্ত্রের মুখে রুহুল কুদ্দুসকে জিম্মি করে। দুর্বৃত্তরা তার ঘরে রক্ষিত নগদ ষাট থেকে সত্তর হাজার টাকা এবং আনুমানিক দুই থেকে তিন ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। পরে তারা রুহুল কুদ্দুসের ব্যবহৃত গামছা দিয়ে তার দুই হাত বেঁধে ফেলে এবং ঘরের গ্রিলে তালা লাগিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েছেন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রুহুল কুদ্দুস সরদার বলেন, “জীবনে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হইনি।
এলাকায় আগে, কখনো এমন ঘটনা দেখিনি। তাই আমরা একেবারেই অপ্রস্তুত ছিলাম। আমার বাড়িটি নির্জন এলাকায় হওয়ায় সম্ভবত তারা সুযোগ নিয়েছে। সকালে স্ত্রী ও মেয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে। স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন উঠেছে, এই দুঃসাহসিক ডাকাতির পেছনে পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের যোগসাজশ থাকতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে ও বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিতর্কিত করার জন্য এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যকলাপ বেড়ে যেতে পারে। তারা মনে করেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করা জরুরি।
আমাদী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) ওসমান গনি জানান, তিনি খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা ভুক্তভোগীকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার জন্য বলেছি। কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ জিএম ইমদাদুল হক বলেন, তিনি ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ঘটনার সময় বাড়িতে তার পরিবারের কোনো সদস্য ছিল না, তিনি একাই ছিলেন। সারাদিন ব্যবসায়িক কাজ শেষে বাড়ি ফিরে রাতের খাবার খেয়ে তিনি হাঁটাহাঁটি করছিলেন। এরই মধ্যে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে দা দেখিয়ে ভয় দেখিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার বের করে নেয়।
আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে ভুক্তভোগী জানান, তার ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন এবং খবর শুনে ছুটিতে বাড়িতে আসার জন্য রওনা হয়েছেন। পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি পদক্ষেপ নেবেন। তিনি আরও জানান, তিনি কাউকে চিনতে পারেননি, তাই কার নামে মামলা করবেন তা বুঝতে পারছেন না।
কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ জিএম ইমদাদুল হক জানান, তিনি ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।