রানা ইসলাম বদরগঞ্জ রংপুর : রংপুরের বদরগঞ্জে বিএনপি নেতা লাভলু মিয়াকে (৫০) নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, পৌরশহরে থানাপাড়া গ্রামের বিশ্বজিৎ রায়, স্টেশনপাড়া এলাকার নয়ন। এ নিয়ে লাভলু হত্যাকাণ্ডে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। তবে হত্যাকাণ্ডের ১৮ দিনেও মূল আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন দলীয় নেতা–কর্মী ও নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা।
এদিকে স্থানীয় দলীয় নেতা–কর্মী ও নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা মূল হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে ২৩ এপ্রিল বুধবার দুপুরে পৌরশহরে বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে সাবেক বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, লাভলু হত্যার ১নং আসামী ভিডিও কনফারেন্স কথা বলে আর পুলিশ বলে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি প্রশাসন কে বলতে চাই আন্দোলন কি দেখছেন আন্দোলনের এখন কিছু দেখেননি।আগামী দুই একদিনের মধ্যে আসামী না ধরলে কঠোর আন্দোলন সংগ্রামী আমরা যাবো।পরে উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে যেয়ে কালুপাড়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে শহিদুল হক মানিককে অপসারণের জন্য স্মারকলিপি দেন।
কালুপাড়ার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ সরকার বলেন, আমাদের অতিতে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করার অভিজ্ঞতা রয়েছে । তাই আমাদের আর আন্দোলন সংগ্রাম করতে বাধ্য করিয়েননা।দয়া করে এখন লাভলু হত্যার সকল আসামিদের ধরেন।
লাভলু মিয়ার স্ত্রী রায়হানা বলেন, ‘আমার স্বামী বিএনপির রাজনীতি করে জীবন পর্যন্ত দিলেন। কিন্তু এখন শুনছি, তিনি নাকি বিএনপিই করেননি। আমার প্রশ্ন, আমার স্বামী যদি বিএনপি না করেই থাকেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এত মামলা হয়েছিল কীভাবে? তাঁকে কেনইবা ছাত্র আন্দোলনের সময়ে জেল খাটতে হয়েছিল। এই নোংরা রাজনীতি বন্ধ করে আমার স্বামীকে ওই মামলার এজাহারে বিএনপির স্বীকৃতি দিতে হবে। এতে তাঁর আত্মা কিছুটা শান্তি পাবে।’
লাভলু মিয়ার ছেলে রায়হান মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা বিএনপির রাজনীতি করতে গিয়ে বাড়ির অনেক টাকা–পয়সা নষ্ট করেছেন। জীবনও দিলেন রাজনীতির পেছনে। এখন আমার সেই বাবাকে একজন ব্যক্তি বলা হচ্ছে। এটা সন্তান হিসেবে মেনে নিতে পারছি না।’
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় এক এজাহারভুক্ত আসামিসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ এপ্রিল দুপুরে বদরগঞ্জ পৌর শহরের একটি দোকান ঘরকে কেন্দ্র করে নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এ সময় লাভলু মিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোপানো হয়। পরে তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।