ঢাকা , সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পিআর পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোন পদ্ধতি জনগণ মানবে না -এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। রাজধানীর মতিঝিলে পবিত্র আশুরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত জুলাই আন্দোলনের মুল শক্তি ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্রশিবির- ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।  নান্দাইলে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন পিতা-পুত্র কালীগঞ্জে মাদক বিরোধী অভিযান: যুবকের ৪ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড        দেবহাটা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারন সভায় কমিটির পূর্নগঠন নুরুল করিম মজুমদারের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া ও পথশিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ খানসামায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে নতুন মামলা মাধবপুর মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শাহ আলম আটক রামবুটান চাষে ভাগ্য বদল প্রবাস ফেরত আফজাল শেখের সাফল্যের গল্প   

গৌরীপুরে সবুজ ধানের পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

গৌরীপুরে সবুজ ধানের পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

 

ওবায়দুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।

দিগন্তজুড়ে এখন ফসলের মাঠে সবুজের সমারোহ। চোখের দৃষ্টি যতদূর যায়, ততদূর এই বিস্তির্ণ সবুজ মাঠে দোল খাচ্ছে বোরো ধানের শীষ। আর এ সবুজ ধানের পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। আর ক’দিন পরেই সোনালি ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পরে মাঠ। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষানির শূন্য গোলা এবং মুখে ফুটে উঠবে হাসির ঝিলিক। ধানের কাঁচা-পাকা শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠে কৃষকের মন।

অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে  ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। মাঠে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।

গৌরীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট  ২০ হাজার ৪শ ১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে উফসী জাতের ধান ও ৫ হাজার ২শ ১০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হয়।

উপজেলার কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কম জমিতে উন্নত জাতের বোরো ধান চাষ করে বেশি ফলন পেতে ব্যাপক সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ উপজেলার কৃষকদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যেই নিচু বিলের জমির আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে।

কৃষি অফিস আরো জানায়, সার, বীজ ও বালাইনাশক সংকট ছিল না। ফলে ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। ধানের সবল-সতেজ চারা এবং শীষ বের হয়েছে। তাই এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদনে পূর্বের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে কৃষক ও কৃষি বিভাগ আশাবাদী।

স্থানীয় কৃষক মজিবুর রহমান জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। বিলের জমির ধান কাটছি। ফলন ভালো হয়েছে। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময় সময়ে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে।

আব্দুর রউফ দুদু জানান, তিনি ১৫ কাঠা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। জমি চাষ, বীজ, সার, রোপন, কীটনাশক মিলিয়ে প্রতি কাঠায় খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকার উপরে। প্রতি কাঠায় ধান উৎপাদন হবে ৬-৭ মণ। প্রতি মণ ধানের দাম যদি ১৪শ-১৫শ টাকা বিক্রি করা হয় তাহলে কিছুটা লাভবান হওয়া যাবে।

তাঁতকুড়া গ্রামের কৃষক মোঃ শহীদুল্লাহ বলেন, কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারব। বাজারে ধানের ন্যায্য দাম পেলে তখন আমাদের স্বপ্ন পূরণ হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, আমাদের এই অঞ্চলে তেমন একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়না, তবু আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি ৮০% শতাংশ ধান পেকে গেলেই তা যেন কেটে গোলায় নিয়ে যায়।

গৌরীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি জানান, বোরো ধান চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় বোরো ধানের রোগবালাই কম হওয়ায় ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে। এই সময়ে জমিতে পানি ধরে রাখার আহবাণ জানান তিনি।

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

পিআর পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোন পদ্ধতি জনগণ মানবে না -এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

গৌরীপুরে সবুজ ধানের পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

আপডেট সময় ০৮:২৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

 

ওবায়দুর রহমান, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি।

দিগন্তজুড়ে এখন ফসলের মাঠে সবুজের সমারোহ। চোখের দৃষ্টি যতদূর যায়, ততদূর এই বিস্তির্ণ সবুজ মাঠে দোল খাচ্ছে বোরো ধানের শীষ। আর এ সবুজ ধানের পাতায় দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। আর ক’দিন পরেই সোনালি ধানের শীষে ঝলমল করবে মাঠের পরে মাঠ। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষানির শূন্য গোলা এবং মুখে ফুটে উঠবে হাসির ঝিলিক। ধানের কাঁচা-পাকা শীষ দেখে আনন্দে বুক ভরে উঠে কৃষকের মন।

অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে  ইরি বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। মাঠে মাঠে দোল খাওয়া নতুন ধানের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।

গৌরীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরসূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় মোট  ২০ হাজার ৪শ ১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে উফসী জাতের ধান ও ৫ হাজার ২শ ১০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করা হয়।

উপজেলার কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কম জমিতে উন্নত জাতের বোরো ধান চাষ করে বেশি ফলন পেতে ব্যাপক সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ উপজেলার কৃষকদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে আসছে। ইতোমধ্যেই নিচু বিলের জমির আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে।

কৃষি অফিস আরো জানায়, সার, বীজ ও বালাইনাশক সংকট ছিল না। ফলে ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হয়েছে। ধানের সবল-সতেজ চারা এবং শীষ বের হয়েছে। তাই এবার ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদনে পূর্বের সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে বলে কৃষক ও কৃষি বিভাগ আশাবাদী।

স্থানীয় কৃষক মজিবুর রহমান জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। বিলের জমির ধান কাটছি। ফলন ভালো হয়েছে। বৈশাখ মাসের মাঝামাঝি সময় সময়ে পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে।

আব্দুর রউফ দুদু জানান, তিনি ১৫ কাঠা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। জমি চাষ, বীজ, সার, রোপন, কীটনাশক মিলিয়ে প্রতি কাঠায় খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকার উপরে। প্রতি কাঠায় ধান উৎপাদন হবে ৬-৭ মণ। প্রতি মণ ধানের দাম যদি ১৪শ-১৫শ টাকা বিক্রি করা হয় তাহলে কিছুটা লাভবান হওয়া যাবে।

তাঁতকুড়া গ্রামের কৃষক মোঃ শহীদুল্লাহ বলেন, কোনো ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে বিগত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারব। বাজারে ধানের ন্যায্য দাম পেলে তখন আমাদের স্বপ্ন পূরণ হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, আমাদের এই অঞ্চলে তেমন একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়না, তবু আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি ৮০% শতাংশ ধান পেকে গেলেই তা যেন কেটে গোলায় নিয়ে যায়।

গৌরীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফার ইয়াসমিন জলি জানান, বোরো ধান চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকায় বোরো ধানের রোগবালাই কম হওয়ায় ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে। এই সময়ে জমিতে পানি ধরে রাখার আহবাণ জানান তিনি।