মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: অসহায় গরিব রিকশাচালককে বেআইনী ভাবে জুতা ও লাঠি দিয়ে পেটানোর অপরাধে রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসান রাসেলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-৫ (প্রশাসন ও শৃঙ্খলা) শাখার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন সচিব ড. মো. মহিউদ্দিন। এই প্রজ্ঞাপনের কপি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রিকশাচালককে নির্দয়ভাবে প্রহার করার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ধরনের আচরণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। সরকারি কর্মচারী হিসেবে তার এ ধরনের আচরণ অশোভনীয়, অসংগত, চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গন্য হবে।
তাই সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। জাহিদ হাসান বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, কোয়ার্টারের সামনে জাহিদ হাসান রাসেল এক রিকশাচালককে পায়ের জুতা খুলে ও তার গাড়ি থেকে লাঠি নিয়ে এসে বেধড়ক পেটান। দেখা যায় প্রাইভেট কারের ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে চালকের শরীরে ও রিকশায় আঘাত করতে থাকেন তিনি। এ ছাড়া অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করতেও দেখা যায় তাঁকে।
এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সোমবার পর্যন্ত দুই দিন ছুটি নেন কর্তা জাহিদ হাসান। রোববার নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ঘটনার জন্য তিনি অনুতপ্ত বলে উল্লেখ করে দায় সারার চেষ্টা করেন। তিনি লেখেন, ‘এমন ঘটনা কি আর কারও জীবনে ঘটেনি? আমি অন্যায় করেছি। তাই বলে কি এত বড় শাস্তি কি আমার পাওনা ছিল? রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার ওই ঘটনার ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে গত শনিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) নির্দেশ দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে রোববার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছেন ইউএনও। এই তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই জাহিদ হাসানকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ জারি করেন সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়’র সচিব ড.মো মহিউদ্দিন।