ঢাকা , শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাবুগঞ্জে নদী গর্ভে বিলীন হওয়া ৪ অসহায় পরিবারের মাঝে লক্ষ্যাধিক টাকার উপকরণ ত্রান বিতরণ।  বোয়ালখালীতে বগি রেখে কক্সবাজার এক্সপ্রেস গেল ঢাকায়।  ইবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও দুর্নীতির শ্বেতপত্রের দাবিতে বিক্ষোভ। মধুপুরে বিএনপি নেতা কর্নেল আজাদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  ধনবাড়ীতে অসহায় পরিবারকে ঘর উপহার দিলো লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব:) আসাদুল ইসলাম আজাদ। বোয়ালখালীর বাদশা মিয়া সওদাগর সড়ক-মাইল্ল্যর পুলের : আতঙ্কে পথচারী বিমান দূর্ঘটনায় নিহত পরিবারের সাথে জামায়াত আমীরের সাক্ষাৎ জামায়াত বিভাজনের রাজনীতি চায় না-মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। গৌরনদীতে জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনের শপথ অনুষ্ঠান। বুড়িচংয়ে “জুলাই পুনর্জাগরণে সমাজ গঠনে শপথ” অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি’র দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস বয়কট ও মানববন্ধন।   

রাণীশংকৈলে বিদেশি ফল অ্যাভোকাডো চাষেও এগিয়ে আসছে কৃষকরা।

রাণীশংকৈলে বিদেশি ফল অ্যাভোকাডো চাষেও এগিয়ে আসছে কৃষকরা।

মাহাবুব আলম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ শষ্য কিংবা সবজি নয় ফলের নাম অ্যাভোকাডো। বলা হয় এ ফল পৃথিবীর মানুষের জন্য সৃষ্টিকর্তার একটি বড় উপহার। কারণ এর মধ্যে রয়েছে মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও মিনারেল।
পৃথিবীর অন্যতম এ পুষ্টিকর ফল এখন বাংলাদেশেই চাষ হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে এটি বাণিজ্যিক আকার ধারণ করবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টারে অ্যাভোকাডোর চারা সম্প্রসারণের কাজ চলমান। একসময় সারাদেশে এ ফলের চারা বিস্তার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।
গত কাল বুধবার (২৩ জুলাই) ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের উত্তরগাঁও গ্রামে একটি বাড়িতে দেখা মেলে এ অ্যাভোকাডো গাছের। সেখানে ১টি গাছে অর্ধ শতাধিক ফল এসেছে। গাছটি ছোট আকারের হলেও এর ফলগুলো দেখতে অনেকটা পেয়ারার মতো, একসঙ্গে কয়েকটি ধরে রয়েছে, যা গাঢ় সবুজ বর্ণের। এর মধ্যে গাছটিতে কয়েক বছর থেকে ফল ধরছে। এবার বিশেষ যত্নে এ গাছের অর্ধশত ফল পাওয়া গেছে।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন এ সি ই ও কে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পটাসিয়াম, যা কলার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি। এছাড়া ১৮ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ৩৪ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। সেজন্য অন্যান্য ফলের তুলনায় এ ফলের মিষ্টতা কম। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সবচেয়ে উপযোগী ফল।
এছাড়া উল্লেখ্য যে পরিমাণে ভালো কোলেস্টেরল রয়েছে, যা শরীরে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টরেল কমায়। সেগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবেও শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি এটি শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট মানের খাবার। শিশুদের পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে। যকৃৎকে সুরক্ষা দেয়। জন্ডিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।

গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে গর্ভপাত রোধ করে এবং স্বাভাবিক গর্ভধারণে সহায়ক হয়। সবার জন্য মানসিক চাপ, হতাশা দূরীকরণ, ক্ষুধা বৃদ্ধি, সুনিদ্রা নিশ্চিত করা এবং দেহের ক্ষতিকর দ্রব্যাদি প্রস্রাব ও মল আকারে বের করে দেহকে সুস্থ রাখতে এ ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একেকটা অ্যাভোকাডোর ওজন প্রায় ৩০০ থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশের কয়েকটি বাজারে বিদেশ থেকে এনে এ ফল বিক্রি হচ্ছে, যা প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। সেগুলো পুষ্টিগুণের কারণে উচ্চবিত্তদের কাছে জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।

এ ফলের ভেতরে বেশ বড় ডিম্বাকার বীজ থাকে। আহাযর্য অংশ মাখনের মতো মসৃণ, হালকা মিষ্টি স্বাদের। পেঁপের মতো কাঁচা-পাকা ফল, সবজি, ভর্তা, সালাদ, শরবতসহ বিভিন্ন ভাবে খাওয়ার সুবিধা আছে। টোস্টে মাখনের পরিবর্তে অ্যাভোকাডো ক্রিম দিয়ে খাওয়া, সালাদে, স্যান্ডুইচে মেয়নেজের পরিবর্তে অ্যাভোকাডোর ক্রিম দিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।

উত্তগাঁও গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, শখের বসে আমেরিকায় থাকা নিজ শ্যালকের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন এ বীজ। আজ এ গাছে ধরেছে থোকা থোকা ফল, দেখতে ভীড় করছে স্থানীয়রা।

কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সহিদুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া ও মাটির গুনগতমান ঠিক থাকলে দেশের অনেক জায়গায় বানিজ্যিক ভাবে এটি চাষ করা যাবে। আমরা এ অ্যাভোকাডো গাছের বীজ রোপন করে মানুষের প্রোটিন,ভিটামিন এ,সি,ই ও পটাসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবো।

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

বাবুগঞ্জে নদী গর্ভে বিলীন হওয়া ৪ অসহায় পরিবারের মাঝে লক্ষ্যাধিক টাকার উপকরণ ত্রান বিতরণ। 

রাণীশংকৈলে বিদেশি ফল অ্যাভোকাডো চাষেও এগিয়ে আসছে কৃষকরা।

আপডেট সময় ০৭:৫৯:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫
মাহাবুব আলম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ শষ্য কিংবা সবজি নয় ফলের নাম অ্যাভোকাডো। বলা হয় এ ফল পৃথিবীর মানুষের জন্য সৃষ্টিকর্তার একটি বড় উপহার। কারণ এর মধ্যে রয়েছে মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও মিনারেল।
পৃথিবীর অন্যতম এ পুষ্টিকর ফল এখন বাংলাদেশেই চাষ হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে এটি বাণিজ্যিক আকার ধারণ করবে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হর্টিকালচার সেন্টারে অ্যাভোকাডোর চারা সম্প্রসারণের কাজ চলমান। একসময় সারাদেশে এ ফলের চারা বিস্তার করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।
গত কাল বুধবার (২৩ জুলাই) ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের উত্তরগাঁও গ্রামে একটি বাড়িতে দেখা মেলে এ অ্যাভোকাডো গাছের। সেখানে ১টি গাছে অর্ধ শতাধিক ফল এসেছে। গাছটি ছোট আকারের হলেও এর ফলগুলো দেখতে অনেকটা পেয়ারার মতো, একসঙ্গে কয়েকটি ধরে রয়েছে, যা গাঢ় সবুজ বর্ণের। এর মধ্যে গাছটিতে কয়েক বছর থেকে ফল ধরছে। এবার বিশেষ যত্নে এ গাছের অর্ধশত ফল পাওয়া গেছে।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, অ্যাভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ভিটামিন এ সি ই ও কে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পটাসিয়াম, যা কলার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি। এছাড়া ১৮ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ৩৪ শতাংশ স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে। সেজন্য অন্যান্য ফলের তুলনায় এ ফলের মিষ্টতা কম। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সবচেয়ে উপযোগী ফল।
এছাড়া উল্লেখ্য যে পরিমাণে ভালো কোলেস্টেরল রয়েছে, যা শরীরে থাকা ক্ষতিকর কোলেস্টরেল কমায়। সেগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবেও শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি এটি শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট মানের খাবার। শিশুদের পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে। যকৃৎকে সুরক্ষা দেয়। জন্ডিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।

গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রে গর্ভপাত রোধ করে এবং স্বাভাবিক গর্ভধারণে সহায়ক হয়। সবার জন্য মানসিক চাপ, হতাশা দূরীকরণ, ক্ষুধা বৃদ্ধি, সুনিদ্রা নিশ্চিত করা এবং দেহের ক্ষতিকর দ্রব্যাদি প্রস্রাব ও মল আকারে বের করে দেহকে সুস্থ রাখতে এ ফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একেকটা অ্যাভোকাডোর ওজন প্রায় ৩০০ থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশের কয়েকটি বাজারে বিদেশ থেকে এনে এ ফল বিক্রি হচ্ছে, যা প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা। সেগুলো পুষ্টিগুণের কারণে উচ্চবিত্তদের কাছে জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।

এ ফলের ভেতরে বেশ বড় ডিম্বাকার বীজ থাকে। আহাযর্য অংশ মাখনের মতো মসৃণ, হালকা মিষ্টি স্বাদের। পেঁপের মতো কাঁচা-পাকা ফল, সবজি, ভর্তা, সালাদ, শরবতসহ বিভিন্ন ভাবে খাওয়ার সুবিধা আছে। টোস্টে মাখনের পরিবর্তে অ্যাভোকাডো ক্রিম দিয়ে খাওয়া, সালাদে, স্যান্ডুইচে মেয়নেজের পরিবর্তে অ্যাভোকাডোর ক্রিম দিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।

উত্তগাঁও গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, শখের বসে আমেরিকায় থাকা নিজ শ্যালকের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন এ বীজ। আজ এ গাছে ধরেছে থোকা থোকা ফল, দেখতে ভীড় করছে স্থানীয়রা।

কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সহিদুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া ও মাটির গুনগতমান ঠিক থাকলে দেশের অনেক জায়গায় বানিজ্যিক ভাবে এটি চাষ করা যাবে। আমরা এ অ্যাভোকাডো গাছের বীজ রোপন করে মানুষের প্রোটিন,ভিটামিন এ,সি,ই ও পটাসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবো।