নিজস্ব প্রতিবেদক।
বাংলাদেশকে নিয়ে আর কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না বলে সংশ্লিষ্টদের সকর্ত করে দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সাথে সাক্ষাতের পর এক প্রেসব্রিফিং-এ এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে পর্যায়ক্রমে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি শোকাহতদের সাথে একান্তে কথা বলেন, এবং তাদের শান্তনা ও বিপদে ধৈর্যধারণের পরামর্শ দেন। মহনগরী আমীর তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা ধৈর্য সহকারে শোনেন এবং জামায়াতের পক্ষ থেকে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিং-এ মিলিত হোন।
এ সময় মহানগরী আমীরের সাথে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা ১৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, উত্তরা পশ্চিম অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম, তুরাগ মধ্য থানা আমীর গাজী মনির হোসাইন, তুরাগ দক্ষিণ থানা আমীর আবু বকর সিদ্দিক, তুরাগ মধ্য থানা নায়েবে আমীর কামরুল হাসান। আরও উপস্থিত ছিলেন ৫৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল প্রার্থী সুরুজ্জামান, ড. দেলোয়ার হোসাইন, জুলফিকার, সাখাওয়াত হোসেনসহ জামায়াতের নেতৃবৃন্দ।সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াত একটি আদর্শবাদী ও মানবিক রাজনৈতিক সংগঠন। দেশ ও জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে আমরা জনগণের পাশে থাকার সাধ্যমত চেষ্ট করেছি।
মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনার, পর কেন্দ্র থেকে আমীরে জামায়াতের নেতৃত্বে এবং মহানগরী উত্তর থেকে একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আমরা আমাদের এম্বুলেন্সগুলোকে সাথে সাথে জরুরি সেবায় নিয়োজিত করেছি। আমরা দগ্ধদের চিকিৎসার জরুরিভিত্তিতে অভিজ্ঞ চিকিৎসক তথা ২০ জন প্লাস্টিক সার্জনকে নিয়োজিত করেছি। নিহত পরিবার ও আহতদের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এমনকি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল এবং ইবনে সিনা হাসপাতালকে দুর্ঘটনা কবলিতদের জন্য ফ্রি চিকিৎসার জন্য আমীরে জামায়াতের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা যেকোন জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণে প্রস্তুত আছি। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসররা এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অস্ত্রহাতে সচিবালয়ে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালানোর চালিয়েছে। সরকার ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। কিন্তু সরকারকে এতোটা ধৈর্য ধরা ঠিক হয়নি। তিনি পতিত স্বৈরাচারের যেকোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি বলেন, রাজনীতিতে মত পার্থক্য থাকবে এবং আছেও। কিন্তু দেশ ও জাতীয় স্বার্থে আমাদেরকে সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। উত্তরায় দুর্ঘটনার পর আমরা যেমন দুর্গতদের পাশে ছিলাম, তেমনিভাবে অন্যরাও ছিলেন। কিন্তু পতিত স্বৈরাচারী অপশক্তি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু একটি পক্ষ এখন স্বৈরাচারের ভাষায় কথা বলছে। তাদের মুখে এখন লেডি ফেরাউনের নেরেটিভ শোনা যাচ্ছে। তারা স্লোগান দিচ্ছে, ‘দিল্লি গেছে স্বৈরাচার, আর পিন্ডি যাবে রাজাকার’।
কিন্তু তাদের মধ্যেই স্বৈরাচার ও রাজাকার ঘাপটি মেরে রয়েছে। আওয়ামী লীগের আমলে যে রাজাকারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছিলো সেখানে তাদের দলেরই রাজাকারের সংখ্যা বেশি। তাই তাদেরকেই দু’দলে ভাগ করে দিল্লি ও পিন্ডি পাঠানোর সময় এসেছে। জনগণ তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বুঝে গেছে। তাই মওকাবাজী করে কোন লাভ হবে না। তিনি সংশ্লিষ্টদের নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেড়িয়ে এসে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসার আহবান জানান। অন্যথায় হাসিনার মত পালানোরও সময় পাবেন না।
মহানগরী আমীর বলেন, একটি পক্ষ নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে শুরু করেছে। তারা অহেতুক ইস্যু সৃষ্টি করে জাতিকে বিভক্ত করতে চায়। অথচ আমরা কখনো বিভাজনের রাজনীতি চাই না বরং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।তিনি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বাথে বিভাজনের রাজনীতি পরিহার করে সকলকে এক মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।