ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
অর্গেনাইজেশন অব দি রিকগনিশন বাংলা কেন্দ্রীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত ​মাদকের একাধিক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী ফারুক র‌্যাব কর্তৃক গ্রেফতার। তানোরের তালন্দ ডিগ্রী কলেজে অচলাবস্থা দায় কার ? খোকসায় পুলিশের অভিযানে ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক ৭ আসামি গ্রেফতার নওগাঁর পোরশায় ডালিম নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের রহস্য জনক মৃত্যু  অসাম্প্রদায়িক ও যুক্তিবাদী কথাশিল্পী শওকত ওসমানের প্রয়াণ দিবস আজ  নওগাঁর মান্দায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আওয়ামীলীগের সহযোগী ৪ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার  নওগাঁর নিয়ামতপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ নওগাঁ সাংবাদিকদের হয়রানী সংবাদের প্রতিবাদে হাপানিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রাজার সংবাদ সম্মেলন করেন  নওগাঁ থেকে র মহাদেবপুরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় উল্লাসে ছাত্র-জনতার মাঝে মিষ্টি বিতরণ

তানোরের তালন্দ ডিগ্রী কলেজে অচলাবস্থা দায় কার ?

তানোরের তালন্দ ডিগ্রী কলেজে অচলাবস্থা দায় কার ?

দেলোয়ার হোসেন সোহেল তানোর থেকে : রাজশাহীর তানোরের ঐতিহ্যবাহী তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি করা নিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিভাবক সুত্র বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাঁর পচ্ছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি করতে নেপথ্যে থেকে নানা কলকাঠি নাড়ছে। তিনি তার চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখতে কলেজে একের পর এক সমস্যার সৃষ্টি করে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। সভাপতি কে হলেন সেটা নিয়ে তো শিক্ষকদের বিরোধিতা করার কিছু নাই।


যে কারণে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজে এমন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে এর দায় নিবে কে ? একাধিক অভিভাবক বলেন,
 জসিম উদ্দিন মৃধাকে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ করার পর থেকেই কলেজে নানা সংকট সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। যা নীতিমালা বর্হিভুত।

জানা গেছে, নিয়মিত গভর্নিং বডি গঠনের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ সভাপতি পদে তিন জনের নাম প্রস্তাব করে। গত ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো এ তালিকায় ছিলেন সেলিম উদ্দিন কবিরাজ, আইনুল হক ও দেওয়ান মো. মকসেদুর রহমান।

তবে এরা আওয়ামী মতাদর্শী বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর ডিওলেটার নিয়ে সেলিম উদ্দিন কবিরাজ তানোর মহিলা ডিগ্রী কলেজের সভাপতি হয়েছিলেন। এতে অভিভাবক মহলের প্রশ্ন যিনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশে কলেজ সভাপতি হয়েছিলেন। জুলাই বিপ্লবের পর তিনি আবার কি বিবেচনায় তালন্দ লোলিত মোহন  ডিগ্রী কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে চান।


এদিকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজের (অবঃ) শিক্ষক বিএনপি নেতা ফনির উদ্দিনকে সভাপতি করে চিঠি পাঠানো হয়। 

 

এমতাববস্থায় তালিকার বাইরের একজনকে সভাপতি করার অজুহাতে কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ ড. মো. জসিম উদ্দীন মৃধা পরদিনই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। এ আবেদনপত্রে কলেজের ৬৩ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেন। তবে শিক্ষকদের অনাস্থার তালিকা চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তালিকা সভাপতি ফনির উদ্দিনকে দিতে পারেনি।

কয়েকজন শিক্ষক বলেন, তারা এবিষয়ে কিছু জানেন না, সভাপতি কে হবেন সেটা তাদের দেখার বিষয় নয়, যিনি হবেন তার সঙ্গে তারা কাজ করবেন এখানে আপত্তি করার কিছু নাই। এরপর গত ১১ মার্চ গভর্নিং বডির সভা ডাকেন সভাপতি ফনির উদ্দিন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের তালিকার বাইরে থাকা সভাপতি হওয়ার অজুহাতে সদস্যরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান এবং কেউ সভায় যোগ দেননি।

১৫ মার্চ বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শককে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফনির উদ্দিন গত ২৭ মার্চ ও ৩ এপ্রিল আরও দুটি সভা ডাকলেও গভর্নিং বড়ির কোনো সদস্য তাতে উপস্থিত হননি।


ফলে ৯ এপ্রিল অধ্যক্ষ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। 
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে সভাপতি হিসাবে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ৩০ এপ্রিল ফের ফনির উদ্দিনকে সভাপতি করে চিঠি দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ এ চিঠি হাতে পায় ৪ মে। এ নিয়ে ৬ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন কবিরাজ।

তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ২৯ এপ্রিল তাকে সভাপতি করা হলে তিনি ৩ মে গভর্নিং বডির সভা ডাকেন এবং সব সদস্য তাতে অংশ নেন। কিন্তু ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি চিঠিতে তিনি দেখতে পান, ৩০ এপ্রিলের তারিখে ফনির উদ্দিনকে আবারও সভাপতি করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় সুশির সমাজের অভিমত, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি দিয়েছে সেটা নিয়ে সাধারণ শিক্ষকদের বিরোধিতা করার তো কিছু নাই। বরং যিনি দায়িত্ব নিয়ে কোনো কাজ শুরু করতে পারেননি তার বিরুদ্ধে কি অপরাধে অনাস্থা আনা হয়েছে, নিশ্চয় এর নেপথ্যে অন্য কিছু রয়েছে, তারা এবিষয়ে অধিকতর তদন্তের দাবি জানান।

এদিকে স্থানীয় একটি সুত্র জানায়, একটি গোষ্ঠী নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে তাদের পচ্ছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অথচ তার বিরুদ্ধে আওয়ামী মতাদর্শীতার অভিযোগ রয়েছে।

এবিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ও সচিব আমিনুল আক্তার বলেন, তালন্দ কলেজ নিয়ে আমরাও খুব বেকায়দায় আছি। আমাদের উপাচার্য পুরো হতাশ হয়ে গেছেন। একবার সভাপতি দেওয়া হয়, তার নামে অভিযোগ আসে। পরিবর্তন করলে আরেকজন আবার ওপর থেকে ফোন করান। ফলে একজনকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে দিতে হয়। আমাদের কোনো দোষ নেই। এখন এসব বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে বলেছি। নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা হবে না।

এবিষয়ে ফনির উদ্দিন বলেন, বিগত দিনে প্রদিপ কুমার মজুমদার সভাপতি থাকা অবস্থায় কয়েকটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সভাপতিকে না জানিয়ে গোপণে তিনটি সভা করে স্বাক্ষর নিতে গেলে সভাপতি (তৎকালীন) প্রদিপ কুমার মজুমদার ৩টি রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করে ফিরিয়ে দেন।

তিনি বলেন, দাতা সদস্য হতে তিন লাখ টাকা ও হিতৈষী সদস্য হতে ৫০ হাজার টাকা কলেজ উন্নয়ন তহবিলে জমা দিতে হয়।কিন্ত্ত এদুটি সদস্যর নামে কলেজ উন্নয়ন ফান্ডে কোনো টাকা জমা নাই। এসব নিয়ে প্রশ্ন করায় তার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ অবস্থান নিয়েছেন।

এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. জসিম উদ্দীন মৃধা বলেন, ‘সভাপতির পদ নিয়ে জটিলতার ফলে কলেজে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সভাপতি ফনির উদ্দীনের পরামর্শে পর পর তিনটি সভা ডাকি, কিন্তু কেউ আসেননি। কমিটির সদস্যরা ওনার সঙ্গে কাজ করতে চান না। ফলে কলেজে স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন হচ্ছে। এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়, ওনারা কীভাবে সমাধান করবেন জানি না।

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

অর্গেনাইজেশন অব দি রিকগনিশন বাংলা কেন্দ্রীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

তানোরের তালন্দ ডিগ্রী কলেজে অচলাবস্থা দায় কার ?

আপডেট সময় ০১:৩৬:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

দেলোয়ার হোসেন সোহেল তানোর থেকে : রাজশাহীর তানোরের ঐতিহ্যবাহী তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি করা নিয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

অভিভাবক সুত্র বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তাঁর পচ্ছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি করতে নেপথ্যে থেকে নানা কলকাঠি নাড়ছে। তিনি তার চেয়ার আঁকড়ে ধরে রাখতে কলেজে একের পর এক সমস্যার সৃষ্টি করে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। সভাপতি কে হলেন সেটা নিয়ে তো শিক্ষকদের বিরোধিতা করার কিছু নাই।


যে কারণে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজে এমন সংকটের সৃষ্টি হয়েছে এর দায় নিবে কে ? একাধিক অভিভাবক বলেন,
 জসিম উদ্দিন মৃধাকে (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ করার পর থেকেই কলেজে নানা সংকট সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। যা নীতিমালা বর্হিভুত।

জানা গেছে, নিয়মিত গভর্নিং বডি গঠনের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ সভাপতি পদে তিন জনের নাম প্রস্তাব করে। গত ১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো এ তালিকায় ছিলেন সেলিম উদ্দিন কবিরাজ, আইনুল হক ও দেওয়ান মো. মকসেদুর রহমান।

তবে এরা আওয়ামী মতাদর্শী বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর ডিওলেটার নিয়ে সেলিম উদ্দিন কবিরাজ তানোর মহিলা ডিগ্রী কলেজের সভাপতি হয়েছিলেন। এতে অভিভাবক মহলের প্রশ্ন যিনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর সুপারিশে কলেজ সভাপতি হয়েছিলেন। জুলাই বিপ্লবের পর তিনি আবার কি বিবেচনায় তালন্দ লোলিত মোহন  ডিগ্রী কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে চান।


এদিকে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজের (অবঃ) শিক্ষক বিএনপি নেতা ফনির উদ্দিনকে সভাপতি করে চিঠি পাঠানো হয়। 

 

এমতাববস্থায় তালিকার বাইরের একজনকে সভাপতি করার অজুহাতে কলেজের (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যক্ষ ড. মো. জসিম উদ্দীন মৃধা পরদিনই বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। এ আবেদনপত্রে কলেজের ৬৩ জন শিক্ষক স্বাক্ষর করেন। তবে শিক্ষকদের অনাস্থার তালিকা চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তালিকা সভাপতি ফনির উদ্দিনকে দিতে পারেনি।

কয়েকজন শিক্ষক বলেন, তারা এবিষয়ে কিছু জানেন না, সভাপতি কে হবেন সেটা তাদের দেখার বিষয় নয়, যিনি হবেন তার সঙ্গে তারা কাজ করবেন এখানে আপত্তি করার কিছু নাই। এরপর গত ১১ মার্চ গভর্নিং বডির সভা ডাকেন সভাপতি ফনির উদ্দিন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের তালিকার বাইরে থাকা সভাপতি হওয়ার অজুহাতে সদস্যরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান এবং কেউ সভায় যোগ দেননি।

১৫ মার্চ বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শককে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফনির উদ্দিন গত ২৭ মার্চ ও ৩ এপ্রিল আরও দুটি সভা ডাকলেও গভর্নিং বড়ির কোনো সদস্য তাতে উপস্থিত হননি।


ফলে ৯ এপ্রিল অধ্যক্ষ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আবেদন করেন। 
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেলিম উদ্দিন কবিরাজকে সভাপতি হিসাবে মনোনয়ন দেয়। কিন্তু মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে ৩০ এপ্রিল ফের ফনির উদ্দিনকে সভাপতি করে চিঠি দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ এ চিঠি হাতে পায় ৪ মে। এ নিয়ে ৬ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন কবিরাজ।

তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ২৯ এপ্রিল তাকে সভাপতি করা হলে তিনি ৩ মে গভর্নিং বডির সভা ডাকেন এবং সব সদস্য তাতে অংশ নেন। কিন্তু ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি চিঠিতে তিনি দেখতে পান, ৩০ এপ্রিলের তারিখে ফনির উদ্দিনকে আবারও সভাপতি করা হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় সুশির সমাজের অভিমত, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি দিয়েছে সেটা নিয়ে সাধারণ শিক্ষকদের বিরোধিতা করার তো কিছু নাই। বরং যিনি দায়িত্ব নিয়ে কোনো কাজ শুরু করতে পারেননি তার বিরুদ্ধে কি অপরাধে অনাস্থা আনা হয়েছে, নিশ্চয় এর নেপথ্যে অন্য কিছু রয়েছে, তারা এবিষয়ে অধিকতর তদন্তের দাবি জানান।

এদিকে স্থানীয় একটি সুত্র জানায়, একটি গোষ্ঠী নিয়োগ বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে তাদের পচ্ছন্দের ব্যক্তিকে সভাপতি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অথচ তার বিরুদ্ধে আওয়ামী মতাদর্শীতার অভিযোগ রয়েছে।

এবিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ও সচিব আমিনুল আক্তার বলেন, তালন্দ কলেজ নিয়ে আমরাও খুব বেকায়দায় আছি। আমাদের উপাচার্য পুরো হতাশ হয়ে গেছেন। একবার সভাপতি দেওয়া হয়, তার নামে অভিযোগ আসে। পরিবর্তন করলে আরেকজন আবার ওপর থেকে ফোন করান। ফলে একজনকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে দিতে হয়। আমাদের কোনো দোষ নেই। এখন এসব বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে বলেছি। নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা হবে না।

এবিষয়ে ফনির উদ্দিন বলেন, বিগত দিনে প্রদিপ কুমার মজুমদার সভাপতি থাকা অবস্থায় কয়েকটি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সভাপতিকে না জানিয়ে গোপণে তিনটি সভা করে স্বাক্ষর নিতে গেলে সভাপতি (তৎকালীন) প্রদিপ কুমার মজুমদার ৩টি রেজুলেশনে স্বাক্ষর না করে ফিরিয়ে দেন।

তিনি বলেন, দাতা সদস্য হতে তিন লাখ টাকা ও হিতৈষী সদস্য হতে ৫০ হাজার টাকা কলেজ উন্নয়ন তহবিলে জমা দিতে হয়।কিন্ত্ত এদুটি সদস্যর নামে কলেজ উন্নয়ন ফান্ডে কোনো টাকা জমা নাই। এসব নিয়ে প্রশ্ন করায় তার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ অবস্থান নিয়েছেন।

এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. জসিম উদ্দীন মৃধা বলেন, ‘সভাপতির পদ নিয়ে জটিলতার ফলে কলেজে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। সভাপতি ফনির উদ্দীনের পরামর্শে পর পর তিনটি সভা ডাকি, কিন্তু কেউ আসেননি। কমিটির সদস্যরা ওনার সঙ্গে কাজ করতে চান না। ফলে কলেজে স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন হচ্ছে। এটা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়, ওনারা কীভাবে সমাধান করবেন জানি না।