তানিম আহমেদ নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার হাজি নুরুল হক নন্নী-পোড়াগাঁও মৈত্রী কলেজে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একাদশ শ্রেণির দুই পরীক্ষার্থীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির জেরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে কলেজ চত্বরে সংঘটিত এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছে শাকিল নামে এক শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১৮ জনকে আটক করেছে, যাদের মধ্যে কলেজের শিক্ষার্থী ও বহিরাগত রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে পরীক্ষা চলাকালে নন্নী উত্তরবন্দ গ্রামের ফরহাদ নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে একই শ্রেণির খালভাঙ্গা এলাকার আমিনুল ইসলাম আকাশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। আকাশ বেঞ্চে ধাক্কা খেয়ে আহত হলে উভয়ের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। একপর্যায়ে ফরহাদের বন্ধু শাকিল বিষয়টির প্রতিবাদ করলে আকাশ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মুক্তারকে খবর দেন। পরে মুক্তার ও তার অনুসারীরা কলেজে এসে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
অভিযোগ রয়েছে, বহিরাগতরা কলেজে প্রবেশ করে শাকিলকে মারধর ও ক্ষুরাঘাত করে। এতে উত্তেজিত এলাকাবাসী পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগীদের ধাওয়া করে এবং তাদের দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার একপর্যায়ে ছাত্রনেতা ও শিক্ষকরা কলেজের অফিস কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেন এবং সেখানে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকেন।
খবর পেয়ে নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আফসানা আল আলম ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থী শাকিলকে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা আব্দুল্লাহ দাবি করেন, পরীক্ষার সময় স্থানীয় এক শিক্ষার্থীকে শহরের এক শিক্ষার্থী লাথি মারলে প্রতিবাদকারী আরেক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এরপর বহিরাগতদের ডেকে এনে শাকিলকে রক্তাক্ত করা হয়। এটি একটি পরিকল্পিত হামলা, যেখানে শিবিরপন্থী ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা জড়িত ছিল।
সহকারী পুলিশ সুপার নালিতাবাড়ী সার্কেল আফসানা আল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।