মো. আজিজার রহমান,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনায় দিনাজপুর-৪ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরীসহ ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এ সময় হামলাকারীরা ৪৬টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। মুহূর্তের মধ্যেই আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে চরম বিশৃঙ্খলা ও ভীতি সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি নেতাদের ভাষ্য মতে, শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে কাচিনিয়া বাজারে বিএনপির কেন্দ্রীয় ৩১ দফা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৩ জুলাই ৫নং ভাবকী ইউনিয়নে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন বাঁধে বিপত্তি, দুপুরে জলিল শাহ্ নামে এক বিএনপি নেতার উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তাকে বিবস্ত্র করে লাঞ্ছিত করা হয় এবং বাধা দিতে গেলে সাবেক ইউপি সদস্য আশরাফ আলীর ওপরও হামলা হয়। তিনি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীসহ তার অনুসারীরা সেই হামলার প্রতিবাদ ১১জুলাই সন্ধ্যায় কাচিনীয়া বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন, কর্নেল গ্রুপ।সমাবেশ শেষ মুহূর্তে রাত সাড়ে ৮ টায় সমাবেশে অতর্কিত ভাবে হামলা চালান একটি গ্রুপ।
এবিষয়ে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কর্নেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সমাবেশ চলাকালীন সময়েই বিএনপির অপর গ্রুপের নেতা, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান মিয়া এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভাবকি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আলম তুহিনের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র ব্যক্তি হামলা চালায়।
তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র, লাঠি, রড ও ইটপাটকেল ছিল বলে জানিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শীরা। হামলায় কর্নেল মোস্তাফিজ ও মিজানুর রহমানসহ ২৫ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। তাঁদের অনেকেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আহতদের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হামলাকারীরা বাজারের দোকানপাটেও লাঠিচার্জ করে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে যান। সাধারণ মানুষ দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এবিষয়ে ৪নং খামারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশে এ ধরনের বর্বরোচিত হামলা গণতন্ত্রের চরম অপমান। আমরা এই ঘটনায় জড়িত আখতারুজ্জামান মিয়া ও রবিউল আলম তুহিনসহ সংশ্লিষ্টদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। পাশাপাশি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করতে হবে।
এ বিষয়ে খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজমুল হক জানান, সংঘর্ষের পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখনো কোনো মামলা হয়নি, তবে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।