ঢাকা , রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বরিশালে ছাত্রশিবিরের সাথী শিক্ষা বৈঠক–২০২৫ অনুষ্ঠিত বরিশালে ছাত্রশিবিরের সাথী শিক্ষা বৈঠক–২০২৫ অনুষ্ঠিত ভান্ডারিয়ায় বিএনপির যাচাই-বাছাই কমিটিতে আ. লীগের লোক, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ব্রাহ্মণপাড়ায় রাস্তা ধসে পুকুরে বিলীন হওয়ার শঙ্কা বোয়ালখালীতে সিএনজি ইয়াবাসহ যুবক আটক  ব্রাহ্মণপাড়ায় যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার  আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ — ড. রেজাউল করিম হিজলা থানায় সুধী সমাবেশ ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত। বরিশালে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত।  ময়নামতির ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধিতে ময়নামতি স্কুল এন্ড কলেজকে গড়ে তুলা হবে : দিদারুল আম

শিক্ষার্থী ভুল করেছে, শাস্তি দিলেন ছাদে! ১০ বছরের শিশুকে বস্তায় রোদে ফেলে রাখলেন মাদরাসা প্রধান   

শিক্ষার্থী ভুল করেছে, শাস্তি দিলেন ছাদে! ১০ বছরের শিশুকে বস্তায় রোদে ফেলে রাখলেন মাদরাসা প্রধান   

তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১০ বছরের এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে বস্তায় পুরে রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখার মর্মান্তিক ও অমানবিক এক ঘটনার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে মাদরাসার গেট তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তীব্র রোদের মধ্যে শিশুটিকে চটের বস্তায় আটকে রাখার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী আবু বকর সিদ্দিকী (১০) কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী দাওদাপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় ফুলদী নূরে মদিনা হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী।

ঘটনাটি ঘটে শনিবার (২৮ জুন) সকালে। পরে উদ্ধারের পর দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন। অভিযুক্ত হাফেজ মাওলানা মুফতি জাকারিয়া (২৯) একই উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ এলাকার বাসিন্দা এবং মাদরাসাটির প্রধান শিক্ষক।

স্থানীয়রা জানান, সকালে কোনো এক কারণে আবু বকরকে পিটায় শিক্ষক জাকারিয়া। পরে সে কান্নাকাটি শুরু করলে এবং পরিবারের কাছে বলে দেওয়ার হুমকি দিলে শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে একটি চটের বস্তায় শিশুটির শরীর আটকে মাথা বাহিরে রেখে দোতলা মাদরাসা ভবনের রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখা হয়। এ সময় তাকে যাতে কেউ খুঁজে না পায়, এজন্য মাদরাসার গেট বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।

তারা আরো জানান, বন্দি অবস্থায় বস্তায় প্রস্রাব ও পায়খানা করে শিশুটি। দীর্ঘসময় পর মাদরাসার এক সহপাঠী গোপনে জানালা দিয়ে বের হয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর আশপাশের মানুষ জড়ো হন এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

তারা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক আগেও শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলার জন্য পরিচিত ছিলেন, তবে এতটা নির্মম আচরণ এবারই প্রথম চোখে পড়ে।

শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, “এটা কোনও শিক্ষকের কাজ হতে পারে? আমার ছেলে ছোট, কোনো ভুল করলেও এভাবে নির্যাতনের অধিকার কারো নেই। আমি থানায় অভিযোগ করেছি, মামলা করবো। আমি আমার সন্তানের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।”

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, শিশুটিকে পুরোপুরি বস্তার মধ্যে না রেখে মাথা বাইরে রাখা হয়েছিল, যেন সে পালাতে না পারে।”

তিনি আরও জানান, অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

বরিশালে ছাত্রশিবিরের সাথী শিক্ষা বৈঠক–২০২৫ অনুষ্ঠিত

শিক্ষার্থী ভুল করেছে, শাস্তি দিলেন ছাদে! ১০ বছরের শিশুকে বস্তায় রোদে ফেলে রাখলেন মাদরাসা প্রধান   

আপডেট সময় ০৭:৩১:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

তৈয়বুর রহমান (কালীগঞ্জ) গাজীপুর : গাজীপুরের কালীগঞ্জে ১০ বছরের এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে বস্তায় পুরে রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখার মর্মান্তিক ও অমানবিক এক ঘটনার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার ভয়ে মাদরাসার গেট তালাবদ্ধ করে রাখা হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তীব্র রোদের মধ্যে শিশুটিকে চটের বস্তায় আটকে রাখার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী আবু বকর সিদ্দিকী (১০) কালীগঞ্জ উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী দাওদাপাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে। সে স্থানীয় ফুলদী নূরে মদিনা হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থী।

ঘটনাটি ঘটে শনিবার (২৮ জুন) সকালে। পরে উদ্ধারের পর দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন। অভিযুক্ত হাফেজ মাওলানা মুফতি জাকারিয়া (২৯) একই উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের সাওরাইদ এলাকার বাসিন্দা এবং মাদরাসাটির প্রধান শিক্ষক।

স্থানীয়রা জানান, সকালে কোনো এক কারণে আবু বকরকে পিটায় শিক্ষক জাকারিয়া। পরে সে কান্নাকাটি শুরু করলে এবং পরিবারের কাছে বলে দেওয়ার হুমকি দিলে শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে একটি চটের বস্তায় শিশুটির শরীর আটকে মাথা বাহিরে রেখে দোতলা মাদরাসা ভবনের রেলিংবিহীন ছাদে ফেলে রাখা হয়। এ সময় তাকে যাতে কেউ খুঁজে না পায়, এজন্য মাদরাসার গেট বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেওয়া হয়।

তারা আরো জানান, বন্দি অবস্থায় বস্তায় প্রস্রাব ও পায়খানা করে শিশুটি। দীর্ঘসময় পর মাদরাসার এক সহপাঠী গোপনে জানালা দিয়ে বের হয়ে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর আশপাশের মানুষ জড়ো হন এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

তারা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক আগেও শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলার জন্য পরিচিত ছিলেন, তবে এতটা নির্মম আচরণ এবারই প্রথম চোখে পড়ে।

শিশুটির বাবা মোশারফ হোসেন বলেন, “এটা কোনও শিক্ষকের কাজ হতে পারে? আমার ছেলে ছোট, কোনো ভুল করলেও এভাবে নির্যাতনের অধিকার কারো নেই। আমি থানায় অভিযোগ করেছি, মামলা করবো। আমি আমার সন্তানের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।”

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে তার দাবি, শিশুটিকে পুরোপুরি বস্তার মধ্যে না রেখে মাথা বাইরে রাখা হয়েছিল, যেন সে পালাতে না পারে।”

তিনি আরও জানান, অভিযুক্তকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।