ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নালিতাবাড়ীতে ভ্রাম্যমান আদালতে মাদক কারবারিকে ৩ মাসের কারাদন্ড ও জরিমানা। মহানগরীর আই বাঁধের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ  হরিপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নারীর মৃত্যু কালিহাতীতে সাম্যের পথের উদ্যোগে কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ রাজশাহী মহানগরীতে ছাত্রলীগ নেতা সিফাত-সহ গ্রেফতার ২৬  জেলা প্রশাসকের নির্দেশ উপেক্ষা করে রাজশাহীর বানেশ্বর হাটে ঢলন প্রথায় জিম্মি আম বিক্রেতারা!  হুন্ডি মুকুলের প্রেমতলী বালু ঘাটে জিম্মি ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা  ডা. জুবাইদা রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃক্ষরোপন সিলেটের উন্নয়নে ডা. জুবাইদা রহমানের পরিবার অনন্য ভূমিকা পালন করেছে : ব্যারিস্টার এম এ সালাম  বিএনপিতে চাঁদাবাজ-দখলদারদের কোন জায়গা নেই মুলাদীতে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় আঃ ছত্তার খান মঠবাড়িয়ায় বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ

ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের সাম্প্রদায়িক ভাস্কর্য “অঞ্জলি লহ মোর”

ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের সাম্প্রদায়িক ভাস্কর্য “অঞ্জলি লহ মোর”

ত্রিশাল,(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ফ্যাসিবাদী উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের আমলে তৈরিকৃত ভাস্কর্য অঞ্জলি লহ মোর ভেঙে ফেলা হয়েছে। ১৭ জুন (মঙ্গলবার),২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের সামনের পুকুরে স্থাপিত ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার কার্যক্রম শুরু হয়।
জানা যায়, সাবেক ভিসি অধ্যাপক মোহিত উল আলমের শাসনামলে তৈরীকৃত সবুজে ঘেরা গাছপালায় আচ্ছাদিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত ‘সিন্ধু সরোবর’ ঘরটি প্রতিহিংসার জেরে ভেঙে ফেলে এবং শতাধিক বৃক্ষ নিধন করে উন্নয়নের নামে ৪ কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে সেখানে স্হাপন করা হয় সাম্প্রদায়িক ভাষ্কার্য ‘অঞ্জলি লহ মোর’।
গেল ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন হলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সৌমিত্র শেখরের পতনের পর বেশ কিছুদিন ধরেই ভাষ্কর্যটির বিরোধিতা করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এরই জেরে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে আজ ভেঙে ফেলা হয় ভাষ্কর্যটি।
 
সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের এমন সাম্প্রদায়িক ভাষ্কর্যের নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ভাষার ব্যাবহারিক অর্থতত্বে (pragmatic semantics) অর্থের আগে শব্দটা বেশি প্রাধান্য পায়। অর্থাৎ ভাষায় অর্থের আগে শব্দের অবস্থান। অতএব অর্থ যেটাই হোক, শব্দটা কি, কোথা থেকে আসলো, কেন আসলো, কিভাবে আসলো, কারা আনলো, কেন আনলো, কিভাবে আনলো, এই শব্দের মেন্টাল ইমেজটা কি ও রিয়েল লাইফ এক্সপোজারটা কি? এই সব গুলা বিষয় বিবেচনা করতে হয়। সেই বিবেচনায় গেলে এই “অঞ্জলি লহ মোর” শব্দের ভিতরে আগেরকার দুর্নীতিবাজ ভিসি সৌমিত্র শেখর সাহেবের পার্শ্ব দেশের প্রতি ও সনাতন ধর্মের প্রতি প্রেম ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। এখানে না আছে আমাদের ভূখণ্ডের কোনো নির্যাস, না আছে আমাদের জাতি সত্ত্বার কোনো পরিচয়। অর্থাৎ এটা স্পষ্টতই একটা সাম্প্রদায়িক প্রতীক।”
এছাড়াও তিনি বলেন,  “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অসাম্প্রদায়িক চেতনা চর্চা করতে এই ধরনের সাম্প্রদায়িক শব্দ ও ভাস্কর্য ব্যাবহার করাকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছে। আমি তাদের এই দ্বিচারিতা দেখে রীতিমত অবাক হই। একটা সহজ বিষয় বুঝা দরকার, এই অঞ্চলে মাঠের রাজনীতি যেমন নোংরা, তেমনি শব্দের রাজনীতিটাও অত্যন্ত নোংরা।আর আমাদের অবস্থান সবসময়ই এই ধরনের নোংরামির বিপক্ষে।”
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে ‘অঞ্জলি লহ মোর’ নিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষ নিয়ে স্হানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রনী বলেন, “ অনেক আলোচনা হচ্ছে, যা হয়তো হওয়ারই কথা! যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য কিছু বিষয় আগে থেকেই ভাবতে হয়। প্রথমত, এই উন্নয়ন পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে কি না, পরিবেশের জন্য উপকারী কি না, অথবা আদৌ সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না। কিন্তু আমার মনে হয়, ‘অঞ্জলি লহ মোর’–এর ক্ষেত্রে এসব কোনো দিকই বিবেচনা করা হয়নি।
এছাড়াও নজরুলের গানের সাথে ভাষ্কার্যটির সামঞ্জস্যতা খুজা নিয়ে তিনি আরো বলেন, “অনেকে দেখছি নজরুলের গানের সাথে ভাস্কর্যটির সামঞ্জস্য খুঁজতে চাচ্ছেন। কিন্তু এটা কি হতে পারে না যে, ভাস্কর্যটি টিকিয়ে রাখার জন্যই এর নাম ‘অঞ্জলি লহ মোর’ দেওয়া হয়েছিল? তবে তারপরেও, দিনশেষে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ, দেশের সম্পদ। এভাবে ভাঙাগড়ার সংস্কৃতি থেকে আমাদের সরে আসা উচিত।”
অন্যদিকে, অপরিকল্পিতভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বিভিন্ন স্হাপণা ভাঙা গড়ার নিয়ে জেনাস ভৌমিক নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ এই পুকুরে সাবেক ভিসি মোহিত উল আলম স্যারের বানানো একটা ভাসমান ঘর ছিলো। কেউ বলতো সিন্ধু সরোবর, কেউ বলতো প্রমোদ তরী, কোনও অফিশিয়াল নাম ছিল না সম্ভবত। সৌমিত্র শেখর স্যার এসে সেটা ভেঙে দিলেন। একদল শিক্ষক কর্মকর্তা সেই ভাঙচুরে ভালোই ফুয়েল দিয়েছিলো। তারপর সৌমিত্র শেখর স্যার এসে এই পুকুরে  বানায় ” অঞ্জলি লহ মোর”।এটার কোনও প্রয়োজন ছিলো না, অর্থের অপচয়। তবে যেহেতু জনগণের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে নজরুলের কবিতাকে থিম করে এটা বানানো হয়েছে – বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমী একটি স্থাপত্য হিসেবে এটি থাকতে পারতো। কিন্তু আবারো একদল শিক্ষক কর্মকর্তার ফুয়েল আর বর্তমান ভিসি জাহাঙ্গীর স্যারের প্রায়োরিটি লিস্টে  এটাও ভাঙা পড়লো।
এছাড়াও পরিল্পনা দপ্তরের অপরিকল্পিত উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, “ এখানে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে আছে *ডিপিডি হাফিজ” আর পরিকল্পনা দপ্তর  । বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শুরু করে রাস্তা, ড্রেন, ভবন উনারা  নিজে হাতে বারবার সৃষ্টি করলো আবার ধ্বংস করলো । প্রতিবার ভিসি হিসেবে নতুন মাস্টার আসলে মাস্টার প্লান চেঞ্জ হয়।”

অঞ্জলি লহ মোর ভাঙার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
গাছ কেটে অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত ঘরটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান এর নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সেখানে একটি ভাসমান ঘর ছিল যা ড্রাম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ঘরটির ড্রামগুলো ফুটো হয়ে যাওয়ার ফলে এবং পুকুর সংষ্কার করার জন্য তা ভেঙে ফেলা হয়। এছাড়া অঞ্জলি লহ মোর ভাষ্কর্য ভেঙে ফেলার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষীতে এমনটি হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের নামে বৃক্ষ নিধনের বিষয়ে তিনি বলেন, “ অপরিকল্পিতভাবে যেগুলো গাছপালা রয়েছে সেগুলো গাছ কেটে ফেলা হবে। আমরা ইতিমধ্যেই অনেকগুলো গাছ লাগিয়েছি এবং যেখানে ১ টি গাছ কাটা হচ্ছে সেখানে ১০ টি গাছ লাগনোর জায়গা রেখেই কাজ করা হচ্ছে।”

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

নালিতাবাড়ীতে ভ্রাম্যমান আদালতে মাদক কারবারিকে ৩ মাসের কারাদন্ড ও জরিমানা।

ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের সাম্প্রদায়িক ভাস্কর্য “অঞ্জলি লহ মোর”

আপডেট সময় ০৯:৪৭:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
ত্রিশাল,(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ফ্যাসিবাদী উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের আমলে তৈরিকৃত ভাস্কর্য অঞ্জলি লহ মোর ভেঙে ফেলা হয়েছে। ১৭ জুন (মঙ্গলবার),২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের সামনের পুকুরে স্থাপিত ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার কার্যক্রম শুরু হয়।
জানা যায়, সাবেক ভিসি অধ্যাপক মোহিত উল আলমের শাসনামলে তৈরীকৃত সবুজে ঘেরা গাছপালায় আচ্ছাদিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত ‘সিন্ধু সরোবর’ ঘরটি প্রতিহিংসার জেরে ভেঙে ফেলে এবং শতাধিক বৃক্ষ নিধন করে উন্নয়নের নামে ৪ কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে সেখানে স্হাপন করা হয় সাম্প্রদায়িক ভাষ্কার্য ‘অঞ্জলি লহ মোর’।
গেল ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন হলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সৌমিত্র শেখরের পতনের পর বেশ কিছুদিন ধরেই ভাষ্কর্যটির বিরোধিতা করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। এরই জেরে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে আজ ভেঙে ফেলা হয় ভাষ্কর্যটি।
 
সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের এমন সাম্প্রদায়িক ভাষ্কর্যের নিন্দা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “ভাষার ব্যাবহারিক অর্থতত্বে (pragmatic semantics) অর্থের আগে শব্দটা বেশি প্রাধান্য পায়। অর্থাৎ ভাষায় অর্থের আগে শব্দের অবস্থান। অতএব অর্থ যেটাই হোক, শব্দটা কি, কোথা থেকে আসলো, কেন আসলো, কিভাবে আসলো, কারা আনলো, কেন আনলো, কিভাবে আনলো, এই শব্দের মেন্টাল ইমেজটা কি ও রিয়েল লাইফ এক্সপোজারটা কি? এই সব গুলা বিষয় বিবেচনা করতে হয়। সেই বিবেচনায় গেলে এই “অঞ্জলি লহ মোর” শব্দের ভিতরে আগেরকার দুর্নীতিবাজ ভিসি সৌমিত্র শেখর সাহেবের পার্শ্ব দেশের প্রতি ও সনাতন ধর্মের প্রতি প্রেম ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না। এখানে না আছে আমাদের ভূখণ্ডের কোনো নির্যাস, না আছে আমাদের জাতি সত্ত্বার কোনো পরিচয়। অর্থাৎ এটা স্পষ্টতই একটা সাম্প্রদায়িক প্রতীক।”
এছাড়াও তিনি বলেন,  “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অসাম্প্রদায়িক চেতনা চর্চা করতে এই ধরনের সাম্প্রদায়িক শব্দ ও ভাস্কর্য ব্যাবহার করাকে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করছে। আমি তাদের এই দ্বিচারিতা দেখে রীতিমত অবাক হই। একটা সহজ বিষয় বুঝা দরকার, এই অঞ্চলে মাঠের রাজনীতি যেমন নোংরা, তেমনি শব্দের রাজনীতিটাও অত্যন্ত নোংরা।আর আমাদের অবস্থান সবসময়ই এই ধরনের নোংরামির বিপক্ষে।”
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে ‘অঞ্জলি লহ মোর’ নিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষ নিয়ে স্হানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রনী বলেন, “ অনেক আলোচনা হচ্ছে, যা হয়তো হওয়ারই কথা! যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের জন্য কিছু বিষয় আগে থেকেই ভাবতে হয়। প্রথমত, এই উন্নয়ন পরিবেশের কোনো ক্ষতি করবে কি না, পরিবেশের জন্য উপকারী কি না, অথবা আদৌ সেটা দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না। কিন্তু আমার মনে হয়, ‘অঞ্জলি লহ মোর’–এর ক্ষেত্রে এসব কোনো দিকই বিবেচনা করা হয়নি।
এছাড়াও নজরুলের গানের সাথে ভাষ্কার্যটির সামঞ্জস্যতা খুজা নিয়ে তিনি আরো বলেন, “অনেকে দেখছি নজরুলের গানের সাথে ভাস্কর্যটির সামঞ্জস্য খুঁজতে চাচ্ছেন। কিন্তু এটা কি হতে পারে না যে, ভাস্কর্যটি টিকিয়ে রাখার জন্যই এর নাম ‘অঞ্জলি লহ মোর’ দেওয়া হয়েছিল? তবে তারপরেও, দিনশেষে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ, দেশের সম্পদ। এভাবে ভাঙাগড়ার সংস্কৃতি থেকে আমাদের সরে আসা উচিত।”
অন্যদিকে, অপরিকল্পিতভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বিভিন্ন স্হাপণা ভাঙা গড়ার নিয়ে জেনাস ভৌমিক নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ এই পুকুরে সাবেক ভিসি মোহিত উল আলম স্যারের বানানো একটা ভাসমান ঘর ছিলো। কেউ বলতো সিন্ধু সরোবর, কেউ বলতো প্রমোদ তরী, কোনও অফিশিয়াল নাম ছিল না সম্ভবত। সৌমিত্র শেখর স্যার এসে সেটা ভেঙে দিলেন। একদল শিক্ষক কর্মকর্তা সেই ভাঙচুরে ভালোই ফুয়েল দিয়েছিলো। তারপর সৌমিত্র শেখর স্যার এসে এই পুকুরে  বানায় ” অঞ্জলি লহ মোর”।এটার কোনও প্রয়োজন ছিলো না, অর্থের অপচয়। তবে যেহেতু জনগণের লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে নজরুলের কবিতাকে থিম করে এটা বানানো হয়েছে – বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমী একটি স্থাপত্য হিসেবে এটি থাকতে পারতো। কিন্তু আবারো একদল শিক্ষক কর্মকর্তার ফুয়েল আর বর্তমান ভিসি জাহাঙ্গীর স্যারের প্রায়োরিটি লিস্টে  এটাও ভাঙা পড়লো।
এছাড়াও পরিল্পনা দপ্তরের অপরিকল্পিত উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, “ এখানে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে আছে *ডিপিডি হাফিজ” আর পরিকল্পনা দপ্তর  । বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শুরু করে রাস্তা, ড্রেন, ভবন উনারা  নিজে হাতে বারবার সৃষ্টি করলো আবার ধ্বংস করলো । প্রতিবার ভিসি হিসেবে নতুন মাস্টার আসলে মাস্টার প্লান চেঞ্জ হয়।”

অঞ্জলি লহ মোর ভাঙার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
গাছ কেটে অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং নজরুলের স্মৃতিবিজড়িত ঘরটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান এর নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সেখানে একটি ভাসমান ঘর ছিল যা ড্রাম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ঘরটির ড্রামগুলো ফুটো হয়ে যাওয়ার ফলে এবং পুকুর সংষ্কার করার জন্য তা ভেঙে ফেলা হয়। এছাড়া অঞ্জলি লহ মোর ভাষ্কর্য ভেঙে ফেলার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষীতে এমনটি হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের নামে বৃক্ষ নিধনের বিষয়ে তিনি বলেন, “ অপরিকল্পিতভাবে যেগুলো গাছপালা রয়েছে সেগুলো গাছ কেটে ফেলা হবে। আমরা ইতিমধ্যেই অনেকগুলো গাছ লাগিয়েছি এবং যেখানে ১ টি গাছ কাটা হচ্ছে সেখানে ১০ টি গাছ লাগনোর জায়গা রেখেই কাজ করা হচ্ছে।”