ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিংগারবিল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নলগড়িয়া ও নোয়াবাদী এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতটি ছিল ভিন্ন এক বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।
গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আশঙ্কা করা হয়, ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা বিমানবন্দরের পাশের গেট সংলগ্ন এলাকা দিয়ে প্রায় ১৫০ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে জোরপূর্বক অনুপ্রবেশ করানোর (পুশ-ইন) চেষ্টা হতে পারে। তথ্যটি হাতে পেয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় সীমান্তবর্তী এলাকাজুড়ে বাড়ানো হয় নজরদারি, চালানো হয় রাতভর ত্রিস্তর বিশিষ্ট টহল।
অপর দিকে, পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে স্থানীয় মসজিদ থেকে মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। গ্রামের প্রত্যন্ত অলিগলি জেগে ওঠে সতর্কতার সূরে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বিজিবির কঠোর তৎপরতা ও মাইকিংয়ের কারণে এলাকার মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে সতর্ক প্রহরী হিসেবে অবস্থান নেয়।
নলগড়িয়ার বাসিন্দা আনিস মিয়া বলেন, “রাত সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ মসজিদের মাইক বেজে ওঠে। বলা হয় সীমান্তে সতর্ক থাকতে। আমরা তখনই বুঝি কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।” পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ঘটনার ভিডিও ক্লিপ। এতে জনমনে আরও উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়।
২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জাব্বার আহমেদ বলেন, “আমরা সবসময় সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকাটিতে পুশ-ইনের আশঙ্কা থাকায় আমরা আগেভাগেই কড়া নজরদারি শুরু করি। আপাতত কোনো অনুপ্রবেশ ঘটেনি, তবে আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।” সীমান্তে বিজিবির কঠোর অবস্থান ও স্থানীয় জনগণের সচেতনতা এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। বিজয়নগরের আকাশে-বাতাসে বৃহস্পতিবার রাতে শুধু সতর্কতা নয়, ছিল এক অনন্য সাহসিকতার গল্প।