ঢাকা , শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বিজয়নগরে অজ্ঞাত বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার কালীগঞ্জে শহীদ রমিজ উদ্দিন সমাজ কল্যাণ সংঘের ঈদ পুনর্মিলনী ত্রিশালে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা  হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব ব্রাহ্মণপাড়ায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাড়িঘর নির্মাণের অভিযোগ  জগন্নাথপুরে সাংবাদিক ও সংগঠক আহমেদ হোসাইন ছানু-কে সংবর্ধনা প্রদান জামায়াতের ওপর উপর জনগনের আস্থার প্রমাণ হবে জাতীয় নির্বাচনে : অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন বাবর পঞ্চগড় সীমান্তে চার ভারতীয় সহ ১৬ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ  বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌর ক্লাবের উদ্যোগে ফুটবল ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ।  কালীগঞ্জে গৃহবধূর বাড়িতে সশস্ত্র হামলা ও লুটপাট   

বানারীপাড়া আশ্রয়ণের ঘর তালাবদ্ধ, খোলা আকাশেই জীবনযাপন ৩১পরিবারের

বানারীপাড়া আশ্রয়ণের ঘর তালাবদ্ধ, খোলা আকাশেই জীবনযাপন ৩১পরিবারের

বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে এক টুকরো মাথাগোঁজার ঠাঁইকে আপন ভেবে গড়ে তুলেছিলেন তারা সংসার, স্মৃতি আর স্বপ্ন। অথচ আজ সেই আশ্রয়কেই ‘অবৈধ দখল’ আখ্যা দিয়ে তালাবদ্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এমন চিত্র বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার খেজুরবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩১টি ভূমিহীন পরিবারের।
২০২৩ সালের ২২ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’-এর আওতায় বানারীপাড়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেই ঘোষণার পর মাত্র এক বছর পার হতেই উল্টো দৃশ্য সামনে আসে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পূর্ব কোনও নোটিশ বা সতর্কীকরণ ছাড়াই উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে তালা লাগিয়ে দেয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বাইজিদুর রহমান।
ইউএনও জানান, “এই ঘরগুলোতে যারা বসবাস করছিলেন, তাদের কারোরই বৈধ মালিকানা নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি-ঘর দখল করে রেখেছেন। আগেও তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, মানেননি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ঘর তালাবদ্ধ করেছি।”
কিন্তু বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর দাবি, তারা আশ্রয়ণের ঘরগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। তৎকালীন ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরযুক্ত ‘স্থায়ী বসবাসের অনুমতিপত্র’ রয়েছে তাদের কাছে। সেই কাগজেই তারা ভরসা রেখে দীর্ঘ সময় ধরে এখানে জীবন গড়েছেন।
ঘরের তালা পড়ার পর পরিবারগুলো ঘর ছাড়েনি, কারণ যাওয়ার জায়গা নেই। ঘরের সামনেই পলি-খড় দিয়ে বেড়া ঘেরা করে অস্থায়ী ঘর তুলে এখন তারা খোলা আকাশের নিচে দিন পার করছেন। কয়েক মাসের শিশুর কান্না, স্কুলগামী সন্তানের বই-খাতা ভিজে যাওয়ার অভিজ্ঞতা, এসব এখন তাদের নিত্যদিনের চিত্র। এতদিন পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইউএনও বলেছিলেন, যাদের আর কোথাও ঘর বা জমি নেই, তারা পুনর্বাসনের আওতায় আসবে। কিন্তু ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।

স্থানীয় এক প্রবীণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ এটা ছিল একটা মানবিক ঘোষণা। কিন্তু বাস্তবে গরিবের ঘরে তালা লাগানো হয়। এটা নীতির পরাজয়।”

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজয়নগরে অজ্ঞাত বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার

বানারীপাড়া আশ্রয়ণের ঘর তালাবদ্ধ, খোলা আকাশেই জীবনযাপন ৩১পরিবারের

আপডেট সময় ০৩:০২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে এক টুকরো মাথাগোঁজার ঠাঁইকে আপন ভেবে গড়ে তুলেছিলেন তারা সংসার, স্মৃতি আর স্বপ্ন। অথচ আজ সেই আশ্রয়কেই ‘অবৈধ দখল’ আখ্যা দিয়ে তালাবদ্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। এমন চিত্র বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার খেজুরবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩১টি ভূমিহীন পরিবারের।
২০২৩ সালের ২২ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প’-এর আওতায় বানারীপাড়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেই ঘোষণার পর মাত্র এক বছর পার হতেই উল্টো দৃশ্য সামনে আসে। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পূর্ব কোনও নোটিশ বা সতর্কীকরণ ছাড়াই উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে তালা লাগিয়ে দেয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বাইজিদুর রহমান।
ইউএনও জানান, “এই ঘরগুলোতে যারা বসবাস করছিলেন, তাদের কারোরই বৈধ মালিকানা নেই। তারা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি-ঘর দখল করে রেখেছেন। আগেও তাদের চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, মানেননি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা ঘর তালাবদ্ধ করেছি।”
কিন্তু বাস্তবতা বলছে অন্য কথা। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর দাবি, তারা আশ্রয়ণের ঘরগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। তৎকালীন ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরযুক্ত ‘স্থায়ী বসবাসের অনুমতিপত্র’ রয়েছে তাদের কাছে। সেই কাগজেই তারা ভরসা রেখে দীর্ঘ সময় ধরে এখানে জীবন গড়েছেন।
ঘরের তালা পড়ার পর পরিবারগুলো ঘর ছাড়েনি, কারণ যাওয়ার জায়গা নেই। ঘরের সামনেই পলি-খড় দিয়ে বেড়া ঘেরা করে অস্থায়ী ঘর তুলে এখন তারা খোলা আকাশের নিচে দিন পার করছেন। কয়েক মাসের শিশুর কান্না, স্কুলগামী সন্তানের বই-খাতা ভিজে যাওয়ার অভিজ্ঞতা, এসব এখন তাদের নিত্যদিনের চিত্র। এতদিন পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইউএনও বলেছিলেন, যাদের আর কোথাও ঘর বা জমি নেই, তারা পুনর্বাসনের আওতায় আসবে। কিন্তু ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।

স্থানীয় এক প্রবীণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’ এটা ছিল একটা মানবিক ঘোষণা। কিন্তু বাস্তবে গরিবের ঘরে তালা লাগানো হয়। এটা নীতির পরাজয়।”