ঢাকা , বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুর পৌর বিএনপি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে বিনামূল্যে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত  ব্রাহ্মণপাড়ায় ৫ ফার্মেসিকে ২৮ হাজার টাকা জরিমানা ব্রাহ্মণপাড়ায় প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে পারিবারিক পুষ্টিবাগানের উপকরণ বিতরণ ৮ বছরে ও সড়কে সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি বুড়িচংয়ে কোরপাই – মনঘাটা-আবিদপুর সড়কটি খানাখন্দে বেহাল দশা বোয়ালখালীতে সেনাবাহিনীর হাতে অস্ত্রসহ আটক এক  সাবেক ছাত্রলীগ সদস্য কাজী শফিকুল ইসলামকে প্রত্যাহারের দাবি, স্থানীয়দের নগরীতে আসামী আটক করতে গিয়ে অভিভাবক, সাংবাদিককে গালিগালাজ ও  লাঞ্ছিতের অভিযোগ  গৌরনদীতে পাল্লক পুত্রকে তাড়াতে নানান ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে থানায় অভিযোগ সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে পানিতে ডুবে কন্যা শিশুর মৃত্যু স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরেও মৃত: বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর দিন কাটে ভিক্ষা করে মৃত: ওই মুক্তিযোদ্ধার নম্বরেই অন্যজনের ভাতা ভোগের অভিযোগ 

বিশ্বে বাংলার সুর ছড়িয়ে দিতে চাই” শিল্পী দিনা মণ্ডলের হৃদয়ের কথা

বিশ্বে বাংলার সুর ছড়িয়ে দিতে চাই" শিল্পী দিনা মণ্ডলের হৃদয়ের কথা

 

প্রতিবেদন: আবদুল্লাহ আল মুকিম রাজু, বাংলাদেশের লোকসংগীত অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নাম দিনা মণ্ডল। তার কণ্ঠে বাউল ও ফোক গানের সুর যেন হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসে। দিনাজপুরের মাটিতে বেড়ে ওঠা এই শিল্পী গানকে ভালোবেসেছেন নিজের অস্তিত্ব দিয়ে। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এসেছে তার সংগীতযাত্রা, সংগ্রাম এবং স্বপ্নের নানা দিক।

প্রশ্ন: আপনি গানের জগতে আসলেন কীভাবে?

দিনা মণ্ডল: ছোটবেলা থেকেই গান আমার প্রাণ ছিল। আমার দাদী আরজিনা বেগম আর নানা আকবর আলী ছিলেন আমার প্রথম অনুপ্রেরণা। তারা বাড়িতে বাউল গান গাইতেন, আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম। সেই থেকেই গানের সঙ্গে এক অদ্ভুত আত্মিক বন্ধন তৈরি হয়ে যায়।

প্রশ্ন: প্রথম গানের শিক্ষা কার কাছে পেয়েছেন?

দিনা মণ্ডল: আমি প্রথম নজরুল সংগীতে হাতেখড়ি নেই। আমার শিক্ষক ছিলেন নজরুল সংগীত শিল্পী মুজিবুর রহমান। এরপর ধীরে ধীরে লোকসংগীত, বাউল গান, পালা গান — সব কিছুতেই আগ্রহ জন্মায়।

প্রশ্ন: গানের পথে পাড়ি দেওয়াটা সহজ ছিল?

দিনা মণ্ডল: একেবারেই না। অনেক বাঁধা এসেছে। সমাজ, আত্মীয়স্বজন এমনকি নিজের আত্মবিশ্বাসও মাঝে মাঝে প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু আমি থেমে থাকিনি। আমার স্বামী ছিলেন আমার বড় শক্তি। তিনি চাইলে আমায় গান থেকে দূরে রাখতে পারতেন, কিন্তু তিনি বরং আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিন্দুকরা তো ছিলই, কিন্তু আমি জানতাম, গানই আমার পথ।

প্রশ্ন: আপনি কোন ধরণের গান বেশি গাইতে ভালোবাসেন?

দিনা মণ্ডল: আমি মূলত বাউল ও লোকসংগীতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। হাসন রাজা, লালন, বিজয় সরকার, শাহ আব্দুল করিম—এদের গান শুনেই বড় হয়েছি। এদের ভাব, দর্শন আমার গানে প্রাণ এনে দেয়।

প্রশ্ন: এখন কোথায় কোথায় গানের অনুষ্ঠান করেন?

দিনা মণ্ডল: আমি দেশের নানা প্রান্তে গানের অনুষ্ঠান করেছি। গ্রামেগঞ্জে, শহরে—সব জায়গাতেই দর্শক-শ্রোতারা আমাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। আমার স্বপ্ন, একদিন বিদেশেও বাংলার বাউল গান নিয়ে যাব।

প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

দিনা মণ্ডল: আমি চাই বাংলার লোকগানকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে। আমাদের মাটির গানে যে আত্মা আছে, সেটা যেন সারা পৃথিবী উপলব্ধি করতে পারে। নতুন প্রজন্মকে এ গানের প্রতি আগ্রহী করে তুলতেও কাজ করতে চাই।

দিনা মণ্ডল কেবল একজন শিল্পী নন, তিনি বাংলার সুর ও সংস্কৃতির এক অনন্য ধারক ও বাহক। তার কণ্ঠে যখন বাউল গান ভেসে আসে, তখন যেন এক নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটে যায় হৃদয়ে। তার যাত্রা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

জগন্নাথপুর পৌর বিএনপি অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের আয়োজনে বিনামূল্যে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত 

বিশ্বে বাংলার সুর ছড়িয়ে দিতে চাই” শিল্পী দিনা মণ্ডলের হৃদয়ের কথা

আপডেট সময় ০৩:৪৯:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

 

প্রতিবেদন: আবদুল্লাহ আল মুকিম রাজু, বাংলাদেশের লোকসংগীত অঙ্গনে এক উজ্জ্বল নাম দিনা মণ্ডল। তার কণ্ঠে বাউল ও ফোক গানের সুর যেন হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসে। দিনাজপুরের মাটিতে বেড়ে ওঠা এই শিল্পী গানকে ভালোবেসেছেন নিজের অস্তিত্ব দিয়ে। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এসেছে তার সংগীতযাত্রা, সংগ্রাম এবং স্বপ্নের নানা দিক।

প্রশ্ন: আপনি গানের জগতে আসলেন কীভাবে?

দিনা মণ্ডল: ছোটবেলা থেকেই গান আমার প্রাণ ছিল। আমার দাদী আরজিনা বেগম আর নানা আকবর আলী ছিলেন আমার প্রথম অনুপ্রেরণা। তারা বাড়িতে বাউল গান গাইতেন, আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতাম। সেই থেকেই গানের সঙ্গে এক অদ্ভুত আত্মিক বন্ধন তৈরি হয়ে যায়।

প্রশ্ন: প্রথম গানের শিক্ষা কার কাছে পেয়েছেন?

দিনা মণ্ডল: আমি প্রথম নজরুল সংগীতে হাতেখড়ি নেই। আমার শিক্ষক ছিলেন নজরুল সংগীত শিল্পী মুজিবুর রহমান। এরপর ধীরে ধীরে লোকসংগীত, বাউল গান, পালা গান — সব কিছুতেই আগ্রহ জন্মায়।

প্রশ্ন: গানের পথে পাড়ি দেওয়াটা সহজ ছিল?

দিনা মণ্ডল: একেবারেই না। অনেক বাঁধা এসেছে। সমাজ, আত্মীয়স্বজন এমনকি নিজের আত্মবিশ্বাসও মাঝে মাঝে প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু আমি থেমে থাকিনি। আমার স্বামী ছিলেন আমার বড় শক্তি। তিনি চাইলে আমায় গান থেকে দূরে রাখতে পারতেন, কিন্তু তিনি বরং আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিন্দুকরা তো ছিলই, কিন্তু আমি জানতাম, গানই আমার পথ।

প্রশ্ন: আপনি কোন ধরণের গান বেশি গাইতে ভালোবাসেন?

দিনা মণ্ডল: আমি মূলত বাউল ও লোকসংগীতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। হাসন রাজা, লালন, বিজয় সরকার, শাহ আব্দুল করিম—এদের গান শুনেই বড় হয়েছি। এদের ভাব, দর্শন আমার গানে প্রাণ এনে দেয়।

প্রশ্ন: এখন কোথায় কোথায় গানের অনুষ্ঠান করেন?

দিনা মণ্ডল: আমি দেশের নানা প্রান্তে গানের অনুষ্ঠান করেছি। গ্রামেগঞ্জে, শহরে—সব জায়গাতেই দর্শক-শ্রোতারা আমাকে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। আমার স্বপ্ন, একদিন বিদেশেও বাংলার বাউল গান নিয়ে যাব।

প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

দিনা মণ্ডল: আমি চাই বাংলার লোকগানকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে। আমাদের মাটির গানে যে আত্মা আছে, সেটা যেন সারা পৃথিবী উপলব্ধি করতে পারে। নতুন প্রজন্মকে এ গানের প্রতি আগ্রহী করে তুলতেও কাজ করতে চাই।

দিনা মণ্ডল কেবল একজন শিল্পী নন, তিনি বাংলার সুর ও সংস্কৃতির এক অনন্য ধারক ও বাহক। তার কণ্ঠে যখন বাউল গান ভেসে আসে, তখন যেন এক নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটে যায় হৃদয়ে। তার যাত্রা অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।