নিজস্ব প্রতিবেদক : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার নাজিরপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক সহকারি তহশিলদার শাজাহান কবিরের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির টাকায় কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।
শাহজাহানের পিতা জলিল চৌকিদার ছিলেন, খুবই দরিদ্র দুই ছেলেকে নিয়ে অভাব অনটনে দিন পার করতেন, হোগলা বুনিয়া গ্রামে ছিল ভাঙ্গা একটি কুঁড়েঘর কিন্তু ২০০৬ সালে শাহজাহান ভূমি অফিসে পিয়ন পদে চাকরি হওয়ার পর দারিদ্রতা তাকে আর পিছু টানতে পারেনি, জড়িয়ে পড়েন ঘুষ আর দুর্নীতিতে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নিতে থাকেন টাকা, ভাইজোড়া বাসস্ট্যান্ডের পাশে ৬০ শতাংশ জমি ক্রয় করে আনুমানিক কোটি টাকা খরচ করে একটি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন অথচ একজন সহকারি তসিলদারের বেতন সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা বৈধ আয়ে এত টাকা দিয়ে বাড়ি করা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না, তার বাড়ির পিছনে, বাঘা জোড়া মৌজা সহ আশেপাশের আরো বিভিন্ন মৌজায় ২৫ থেকে ৩০ বিঘা সম্পত্তিক ক্রয় করেছেন নিজের ও স্ত্রীর নামে যার আনুমানিক বাজার মূল্য চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা,
এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক এ গচ্ছিত রয়েছে, বিপুল পরিমাণ অর্থ সবই ক্রয় করেছেন ঘুষ আর দুর্নীতির অবৈধ টাকায়, অভিযোগ আছে সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পিয়ন থেকে সহকারী কর্মকর্তা হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন বলেন, আপনারা পুরো এলাকায় খোঁজ নিন শাজাহান ও তার পরিবার না খেয়ে থাকত এরা অনেক দরিদ্র ছিল, ওর বাবাকে জলিল চৌকিদার এক নামে সবাই চেনে মানুষের সাহায্য নিয়ে তার সংসার চলত, শাজাহান যেসব ইউনিয়নে কাজ করেছে প্রত্যেকটা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া কোন কাজ করত না এবং মানুষের সাথে খুবই দুর্ব্যবহার করত ।
অভিযোগ আছে, তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও ১৯৯৮ সনে ৫০০ টাকা বেতনে নাজিরপুর উপজেলার উত্তর চালিতাবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন, ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি হয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষিকা প্রতিবেদককে বলেন শাহজাহান ও তার স্ত্রী খালেদা পারভীন এরা অনেক প্রভাবশালী প্রকাশ্য এদের বিরুদ্ধে কথা বললে আমাদের উপর অনেক ধরনের বিপদ নেমে আসবে তারা বলেন খালেদা পারভীন এইচএসসির জাল সার্টিফিকেট দিয়ে স্কুলে চাকরি করছে, বিগত আওয়ামী লীগ আমলে শাজাহান ও তার স্ত্রীর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে গভীর সখ্যতা ছিল, সরকার পরিবর্তন হলে তাদের ক্ষমতার পরিবর্তন হয়নি বিন্দুমাত্র।
২০২৩ সালে নাজিরপুরের এসি ল্যান্ড এর একটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়ে যায় ঘুষের রেট ঠিক করে দিচ্ছিলেন সেই বৈঠকে শাজাহান কবির উপস্থিত ছিলেন, কিছুদিন পরে শাস্তি মূলক ভাবে তাকে ভোলার তজিমদ্দ দিনে বদলি করা হয় কিন্তু কর্মস্থলে যোগদানের পূর্বেই তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় যা এখনো বলবৎ আছে, এ বিষয়ে অনেকেই অভিযোগ করেন শাজাহান ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে পুনরায় চাকরি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাজাহান কবিরের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়