ঢাকা , বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নওগাঁর বদলগাছীতে দেরিতে স্কুলে আসায় শিক্ষককে শোকজ  তানোরে প্লাষ্টিক সংগ্রহ ও বর্জন অভিযান মাধবপুরে দুনীর্তি প্রতিরোধ কমিটির বির্তক প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত জগন্নাথপুরে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী সহ গ্রেফতার ৩ সাংবাদিকদের কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য করবেন না: বিএমএসএফ করিডোর বাংলাদেশকে ধীরে ধীরে এক পরাশক্তির যুদ্ধের খেলায় পরিণত করবে। ভেঙে পড়ল জগন্নাথপুরের ডাকবাংলো সেতুর রেলিং। রাজস্থলীতে ইউনিয়ন পর্যায়ে এ্যাডভোকেসি এন্ড নেটওয়ার্কিং ফোরামের সভা অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণপাড়ায় পানিতে ডুবে ২ শিশু মৃত্যু ঘটনায় প্রশাসনের নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার লাইব্রেরিতে গবেষণায় মুগ্ধ বিদেশি দুই গবেষক

জগন্নাথপুরে এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই হাওরের বোরো ধান কাটা শতভাগ শেষ হয়েছে।

জগন্নাথপুরে এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই হাওরের বোরো ধান কাটা শতভাগ শেষ হয়েছে।

মাসুম আহমদ, জগন্নাথপুর প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই হাওরের বোরো ধান কাটা শতভাগ শেষ হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয়মাসু  কৃষি বিভাগ এ তথ্যে নিশ্চিত করেছে। তবে নন হাওরে বিচ্ছিন্ন কিছু জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। এসব জমির ধান দুই তিনদিনের মধ্যে কর্তৃন সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এদিকে, বৈশাখের প্রথম দিকে আবহাওয়ার আগাম বার্তায় মাঠভরা সোনার ধান নিয়ে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটনায় ভালোয় ভালোয় ধান কাটতে পেরে স্বস্তির নি:শ্বাস নিচ্ছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে কর্ষ্ঠাজিত ফসল গোলা ভরছে। সেই আনন্দে হাসছে কৃষক পরিবার। তবে বড় বড় কৃষক পরিবার এখনও ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছোট ও মাঝারি আকারের কৃষক পরিবারের বোরোর ব্যস্ততা কমেছে। এরমধ্যেই তাঁরা তাঁদের ক্ষেতের পাকা ফসল ঘরে তুলতে পেরে আনন্দে হাসছে। এবার ফসলের ফলন ভালো হওয়ায় আর নিরাপদে ঘরে ধান তুলতে পারে খুশি কৃষক। এবছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।


হাওরে ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, 
চিত্রের শেষ দিকে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জমির বোরো ধান কাটা শুরু হলেও পহেলা বৈশাখ আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটার উৎসব কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এরপরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক জরুরি বার্তায় বলা হয়, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য হাওরের ৮০ ভাগ ধান পাকলেই দ্রুত কাটতে কৃষকদের অনুরোধ জানান উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। তবে অব্যাহত রোদের কারণে আর বৈরী আবহাওয়ার শঙ্কা কেটে যাওযায় হাওরে পুরোদমে ধান কাটার ধুম পড়ে।


মইয়ার হাওরের ইকড়ছই গ্রামের কৃষক ছাতির আলী বলেন, 
এবার ১০ কেদার জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধান আবাদ করেছিলাম। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটনায় সব জমির ধান কেটে বৈশাখ মাস শেষ হাওয়ার আগেই গোলায় তুলতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। প্রতি কেদারে কমপক্ষে ২০ মণ করে ধান মিলেছে বলে এই কৃষক জানিয়েছেন।

নলুয়া হাওরের কৃষক গনেশ চন্দ্র দাস বলেন, এবছর ৩৬ কেদার জমিতে চাষাবাদ করেছি। ধান কাটা শেষ হয়েছে। কিছু জমির ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ চলছে। ভালোয় ভালোয় এবার ফসল কর্তৃন করতে পেরে আমরা হাওরবাসী খুশি।

ভুরাখালি গ্রামের বলেন, বৈশাখ মাস মানেই বোরো ধানের উৎসব। পুরো বৈশাখজুড়েই ঘরে ফসল তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকি আমরা। এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকার ফলে কৃষকরা স্বস্তিতে গোলায় ধান তুলছেন। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এবছর জগন্নাথপুরের ছোট বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন। যা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, জগন্নাথপুরে ছোট বড় সব ক’টি হাওরের শতভাগ ধান কাটার কাজ শেষ। শুধু কিছু কিছু এলাকায় বাড়ির পাশের বিচ্ছিন্ন কিছু জমির ধান ১ শতাংশের মতো কাটা বাকি রয়েছে। আশা করছি এক দুদিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এবার বাস্পার ফলনে খুশি কৃষক পরিবার। পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান গোলায় তুলছেন কৃষকরা। এবার আমাদের প্রত্যাশা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

নওগাঁর বদলগাছীতে দেরিতে স্কুলে আসায় শিক্ষককে শোকজ 

জগন্নাথপুরে এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই হাওরের বোরো ধান কাটা শতভাগ শেষ হয়েছে।

আপডেট সময় ০১:৩৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

মাসুম আহমদ, জগন্নাথপুর প্রতিনিধি সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই হাওরের বোরো ধান কাটা শতভাগ শেষ হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয়মাসু  কৃষি বিভাগ এ তথ্যে নিশ্চিত করেছে। তবে নন হাওরে বিচ্ছিন্ন কিছু জমির ধান কাটা বাকি রয়েছে। এসব জমির ধান দুই তিনদিনের মধ্যে কর্তৃন সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এদিকে, বৈশাখের প্রথম দিকে আবহাওয়ার আগাম বার্তায় মাঠভরা সোনার ধান নিয়ে কৃষকদের মধ্যে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটনায় ভালোয় ভালোয় ধান কাটতে পেরে স্বস্তির নি:শ্বাস নিচ্ছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে কর্ষ্ঠাজিত ফসল গোলা ভরছে। সেই আনন্দে হাসছে কৃষক পরিবার। তবে বড় বড় কৃষক পরিবার এখনও ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ছোট ও মাঝারি আকারের কৃষক পরিবারের বোরোর ব্যস্ততা কমেছে। এরমধ্যেই তাঁরা তাঁদের ক্ষেতের পাকা ফসল ঘরে তুলতে পেরে আনন্দে হাসছে। এবার ফসলের ফলন ভালো হওয়ায় আর নিরাপদে ঘরে ধান তুলতে পারে খুশি কৃষক। এবছর বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।


হাওরে ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, 
চিত্রের শেষ দিকে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু জমির বোরো ধান কাটা শুরু হলেও পহেলা বৈশাখ আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটার উৎসব কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এরপরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক জরুরি বার্তায় বলা হয়, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি এবং ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য হাওরের ৮০ ভাগ ধান পাকলেই দ্রুত কাটতে কৃষকদের অনুরোধ জানান উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। তবে অব্যাহত রোদের কারণে আর বৈরী আবহাওয়ার শঙ্কা কেটে যাওযায় হাওরে পুরোদমে ধান কাটার ধুম পড়ে।


মইয়ার হাওরের ইকড়ছই গ্রামের কৃষক ছাতির আলী বলেন, 
এবার ১০ কেদার জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধান আবাদ করেছিলাম। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটনায় সব জমির ধান কেটে বৈশাখ মাস শেষ হাওয়ার আগেই গোলায় তুলতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। প্রতি কেদারে কমপক্ষে ২০ মণ করে ধান মিলেছে বলে এই কৃষক জানিয়েছেন।

নলুয়া হাওরের কৃষক গনেশ চন্দ্র দাস বলেন, এবছর ৩৬ কেদার জমিতে চাষাবাদ করেছি। ধান কাটা শেষ হয়েছে। কিছু জমির ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ চলছে। ভালোয় ভালোয় এবার ফসল কর্তৃন করতে পেরে আমরা হাওরবাসী খুশি।

ভুরাখালি গ্রামের বলেন, বৈশাখ মাস মানেই বোরো ধানের উৎসব। পুরো বৈশাখজুড়েই ঘরে ফসল তোলা নিয়ে ব্যস্ত থাকি আমরা। এবার বৈশাখ মাস শেষ হওয়ার আগেই শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকার ফলে কৃষকরা স্বস্তিতে গোলায় ধান তুলছেন। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এবছর জগন্নাথপুরের ছোট বড় ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন। যা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, জগন্নাথপুরে ছোট বড় সব ক’টি হাওরের শতভাগ ধান কাটার কাজ শেষ। শুধু কিছু কিছু এলাকায় বাড়ির পাশের বিচ্ছিন্ন কিছু জমির ধান ১ শতাংশের মতো কাটা বাকি রয়েছে। আশা করছি এক দুদিনের মধ্যে সম্পন্ন হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এবার বাস্পার ফলনে খুশি কৃষক পরিবার। পাশাপাশি আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান গোলায় তুলছেন কৃষকরা। এবার আমাদের প্রত্যাশা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।