গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : ইয়ামিন ইসলাম ইমন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ায় শিক্ষকের পদত্যাগ ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের সময় বিদ্যালয়ে আসার পথে প্রধান শিক্ষককে গণধোলাই দিয়েছে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ বাজারের পশ্চিম পাশে অবস্থিত মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনষ্টিটিউশনে এ ঘটনা ঘটে। সকাল ১০টায় প্রতিদিনের মত শিক্ষার্থীরা অ্যাসেম্বলিতে অংশ নেয়। অ্যাসেম্বলি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তারা মিছিল নিয়ে রাধাগঞ্জ-কুশলা সড়কে গিয়ে অবস্থান নেয়। এসময় প্রধান শিক্ষক নাসিরউদ্দিন বিদ্যালয়ের আসার সময় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ও এলাকাবাসী তাকে গণধোলাই দেয়।
খবর পেয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মাসুম বিল্লাহ ও কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। শিক্ষার্থীরা তাদের সামনেই প্রধান শিক্ষক নাসিরউদ্দিন ও তার ভাই সহকারি শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের পদত্যাগ এবং বিচারের দাবীতে বিভিন্ন প্রকার স্লোগান দিতে থাকে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মাসুম বিল্লাহ দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প‚র্বক শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নাসিরউদ্দিনের ভাই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজল বিভিন্ন শ্রেণীর ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিভিন্ন সময় এসব ঘটনা জানাজানি হলেও প্রধান শিক্ষকের প্রভাবে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। সোমবার রাতে দশম শ্রেনির এক ছাত্রীকে মোবাইল ফোনে কুপ্রস্তাব দিলে ওই ছাত্রী কৌশলে শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের কথাগুলো রেকর্ড করে অভিভাবকদের জানায়। পরবর্তীতে এই অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে।
এ ঘটনায়, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এস এম শাহজাহান সিরাজকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে দুই কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য বিদ্যালয়ে ও বাড়িতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক নাসিরউদ্দিন ও তার ভাই সহকারি শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলকে পাওয়া যায়নি। দুজনের মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিদ্যালয়টির পরিবেশ বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, এ ঘটনায় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এস এম শাহজাহান সিরাজকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে দুই কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।