ঢাকা , সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রশাসনিক পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইবির উপাচার্য কার্যালয়ে হট্টগোল রাঙ্গাবালীতে সংরক্ষিত বনে মহিষ চুরির অভিযোগে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা। শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার আড়াই বছরের সন্তান রেখে মায়ের আত্মহত্যা। ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি মামলার ০১ জন আসামিকে আটক করেছে র‌্যাব। সাতকানিয়ায় গতকাল রাতে ২জন হত্যা একটি পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাকান্ড চিকিৎসকদের সম্মানে এনডিএফ-এর ইফতার মাহফিলে ক্ষমতা নয়, দুনিয়াতে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর -ডা. শফিকুর রহমান। ধনবাড়ীতে বাস-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১ আহত ৪ গৌরীপুরে নকল জুস কারখানায় অভিযান, মালিককে কারা ও অর্থদণ্ড, কারখানা সীলগালা ট্রিপল মার্ডার মামলায় আরও ০১ জন সন্দেহভাজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক ও সদস্য বানারীপাড়ার দুই মেধাবী সন্তান

প্রশাসনিক পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইবির উপাচার্য কার্যালয়ে হট্টগোল

প্রশাসনিক পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইবির উপাচার্য কার্যালয়ে হট্টগোল

 

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন পদে আওয়ামী দোসরদের অপসারণ ও সৎ-মেধাবীদের নিয়োগের দাবিতে উত্তপ্ত হয় উপাচার্য কার্যালয়। এসময় উপাচার্য কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং শিক্ষকদের দফায় দফায় হট্টগোলে প্রশাসন ভবন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরবেলা এসব ঘটনা ঘটে। উপাচার্য কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং উপাচার্যের বাকবিতন্ডা হয়।

জানা যায়, রেজিস্ট্রার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরসহ বিভিন্ন পদ থেকে আওয়ামীপন্থীদের অপসারণ এবং গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে ছাত্র সংগঠনগুলো।

আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান মেগা প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. নওয়াব আলীর সঙ্গে প্রশাসনের এক মিটিং চলাকালে তাকে অপসারণের দাবিতে হট্টগোল শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ড. নওয়াব আলীকে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি প্রশাসন ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুনের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

এ সময় উপাচার্যের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।

নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ আসলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এতে উপস্থিত সবাই তুমুল হট্টগোলে জড়িয়ে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে বাধা প্রদান করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের উদ্দেশে বলেন, “আপনি যখন আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন, তখন বাইরের কেউ কেন এখানে থাকবে? আমরা আপনাকে বলেছিলাম। যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাড়া কারো সঙ্গে আপনি আলোচনা করবেন না, কারো কথা শুনবেন না। তাহলে আজকে এই রুমের আওয়াজ আমতলা থেকে শোনা যাচ্ছে কেন?”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা হট্টগোল করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, আমি তাদের গলা টিপে হত্যা করব। প্রশাসন ভবনে যে কর্মকর্তারা চেঁচামেচি করছে, আমরা তাদের অবস্থান জানি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এককভাবে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা প্রশাসনের সবাইকে সহযোগিতা করে আসছি। কেউ যদি আমাদের এই সহযোগিতাকে ছিন্ন করতে চায়, আমরা তার গলা নলি টেনে ছিঁড়ে ফেলব। আমরা ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলাম, যারা হট্টগোল করেছে তাদের বিচার করতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “প্রক্টর শাহিনুজ্জামানের সঙ্গে আমার কী হয়েছে, তা আমি মনে রাখিনি। কিন্তু একজন সহকারী প্রক্টর ড. আব্দুল বারীসহ অন্যরা আমাদের দিকে তেড়ে আসে, একজন সহকারী প্রক্টর কিভাবে এবং কেন আমার দিকে তেড়ে আসবে? আমার ওপর চড়াও হয়, আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। আত্মরক্ষার্থে আমি তখন তাকে হাত দিয়ে সরিয়ে দেই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “এই ক্যাম্পাসের প্রতিটি সমস্যা আমি সমাধান করছি, চিৎকার-চেঁচামেচি হলে আমি ঠেকাচ্ছি। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছু দিতে এসেছি, এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়ার বা নেওয়ার মতো আমার কিছু নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয় বিভাজন করে আমার কোনো ফায়দা নেই। যারা এখানে হট্টগোল করেছে, তাদের একটা উপলব্ধি থাকা উচিত- আমি কখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলিনি, কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না। আমি উপ-উপাচার্যকে প্রশাসনের নিজেদের পরিপূরক মনে করি। কারও সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি হবে, আমি কখনো ভাবিনি।

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রশাসনিক পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইবির উপাচার্য কার্যালয়ে হট্টগোল

প্রশাসনিক পদে নিয়োগকে কেন্দ্র করে ইবির উপাচার্য কার্যালয়ে হট্টগোল

আপডেট সময় ১১:২২:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

 

ইবি প্রতিনিধি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন পদে আওয়ামী দোসরদের অপসারণ ও সৎ-মেধাবীদের নিয়োগের দাবিতে উত্তপ্ত হয় উপাচার্য কার্যালয়। এসময় উপাচার্য কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী, ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং শিক্ষকদের দফায় দফায় হট্টগোলে প্রশাসন ভবন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরবেলা এসব ঘটনা ঘটে। উপাচার্য কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং উপাচার্যের বাকবিতন্ডা হয়।

জানা যায়, রেজিস্ট্রার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরসহ বিভিন্ন পদ থেকে আওয়ামীপন্থীদের অপসারণ এবং গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে ছাত্র সংগঠনগুলো।

আজ মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান মেগা প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. নওয়াব আলীর সঙ্গে প্রশাসনের এক মিটিং চলাকালে তাকে অপসারণের দাবিতে হট্টগোল শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডি ও প্রশাসনের সহযোগিতায় ড. নওয়াব আলীকে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি প্রশাসন ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ ও সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুনের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

এ সময় উপাচার্যের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল বারী, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম।

নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ আসলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এতে উপস্থিত সবাই তুমুল হট্টগোলে জড়িয়ে যান। এ সময় সাংবাদিকদের কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে বাধা প্রদান করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের উদ্দেশে বলেন, “আপনি যখন আপনার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন, তখন বাইরের কেউ কেন এখানে থাকবে? আমরা আপনাকে বলেছিলাম। যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাড়া কারো সঙ্গে আপনি আলোচনা করবেন না, কারো কথা শুনবেন না। তাহলে আজকে এই রুমের আওয়াজ আমতলা থেকে শোনা যাচ্ছে কেন?”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা হট্টগোল করে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে, আমি তাদের গলা টিপে হত্যা করব। প্রশাসন ভবনে যে কর্মকর্তারা চেঁচামেচি করছে, আমরা তাদের অবস্থান জানি। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় আমরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এককভাবে আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ করেছি। আমরা প্রশাসনের সবাইকে সহযোগিতা করে আসছি। কেউ যদি আমাদের এই সহযোগিতাকে ছিন্ন করতে চায়, আমরা তার গলা নলি টেনে ছিঁড়ে ফেলব। আমরা ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিলাম, যারা হট্টগোল করেছে তাদের বিচার করতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, “প্রক্টর শাহিনুজ্জামানের সঙ্গে আমার কী হয়েছে, তা আমি মনে রাখিনি। কিন্তু একজন সহকারী প্রক্টর ড. আব্দুল বারীসহ অন্যরা আমাদের দিকে তেড়ে আসে, একজন সহকারী প্রক্টর কিভাবে এবং কেন আমার দিকে তেড়ে আসবে? আমার ওপর চড়াও হয়, আমার সামনে এসে দাঁড়ায়। আত্মরক্ষার্থে আমি তখন তাকে হাত দিয়ে সরিয়ে দেই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “এই ক্যাম্পাসের প্রতিটি সমস্যা আমি সমাধান করছি, চিৎকার-চেঁচামেচি হলে আমি ঠেকাচ্ছি। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছু দিতে এসেছি, এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়ার বা নেওয়ার মতো আমার কিছু নেই। এ বিশ্ববিদ্যালয় বিভাজন করে আমার কোনো ফায়দা নেই। যারা এখানে হট্টগোল করেছে, তাদের একটা উপলব্ধি থাকা উচিত- আমি কখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলিনি, কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না। আমি উপ-উপাচার্যকে প্রশাসনের নিজেদের পরিপূরক মনে করি। কারও সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি হবে, আমি কখনো ভাবিনি।