ঢাকা , শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কালীগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে গোসলে নেমে শিশুর মৃত্যু তানোর-বায়া সড়কের ২ টি ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ খুলছে না নতুন ব্রিজের রাস্তা  নকলায় সংবর্ধিত হলেন বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সোনালী ব্যাংকের ৩ কর্মকর্তা ব্রাহ্মণপাড়ায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতি গ্রস্তদের পাশে ব্যারিস্টার মামুন, ফায়ার সার্ভিস করে দেওয়ার আশ্বাস চুরির অপবাদ দিয়ে ব্রাহ্মণপাড়ায় এক ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত কুমিল্লা মিরপুর সড়ক চার লেনে উন্নীত করার দাবীতে মানববন্ধন বৈষম্যহীন ন্যায় ও ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের বিকল্প নেই -মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল ১২ দোকান পুড়ে ছাই ব্রাহ্মণপাড়ার অগ্নিকাণ্ডে কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি  ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ ভাইরাল মোশারফ হোসেন ওরফে আলভিসহ ০৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-২। উল্টো রথের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালহালিয়া রাধামদন গোপাল গিরিধারী সেবা কুঞ্জ মন্দিরের রথযাত্রা সম্পন্ন

ডিপিডিসির মিটার রিডার রফিকুল বিদ্যুৎ চুরির টাকায় বাড়ি গাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক 

ডিপিডিসির মিটার রিডার রফিকুল বিদ্যুৎ চুরির টাকায় বাড়ি গাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক 

শেখ ফয়সাল আহমেদ

ডিপিডিসির মিটার রিডারের পদটি যেন আলাদিনের চেরাগ ঘষা দিলেই শুধু টাকা আর টাকা অনেক মিটার রিডার অবৈধ সংযোগ, মিটার কারসাজি ও বিল কমানোর নামে অর্থ আদায় করে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়ে গেছেন একই পথ অনুসরণ করেছেন রফিকুল ইসলাম।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর একজন মিটার রিডার একেএম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ ও তার ঘুষ দুর্নীতি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে আছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, মিটার টেম্পারিং ও বিদ্যুৎ বিল কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন এবং এখনো চলমান রয়েছে। পরোয়া করেন না কাউকে নিজেকে পরিচয় দেন খুব প্রভাবশালী হিসেবে।

২০২৩ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যানের বাসিন্দা সোয়েব হোসেন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, অভিযোগকারী সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও আশপাশের এলাকায় বস্তি ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আসছিলেন। এসব সংযোগের বিনিময়ে প্রতি মাসে নেওয়া হতো মোটা অঙ্কের ঘুষ। একইসাথে, আবাসিক গ্রাহকদের মিটারে কারচুপি করে বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বড় অঙ্কের টাকা।

রফিকুল ইসলামের নামে রয়েছে, মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে দুটি বহুতল ভবন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। এছাড়া ও কাটাসুর ও লালমাটিয়ায় দুটি ফ্ল্যাট, নিজ এলাকায় কয়েক একর ফসলি জমি, দুটি মোটরবাইক, দুটি মাইক্রোবাস এবং একটি বন্ধকী ফ্ল্যাটও আকার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এসব সম্পদের কোনোটিই তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

ইতিপূর্বে বিভিন্ন সাংবাদিকের কাছে রফিকুল ইসলাম নিজেই স্বীকার করেছিলেন, দুর্নীতির টাকায় তিনি চাঁদ উদ্যানে দুটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তবে অধিকাংশ সাংবাদিককে তিনি প্রতিবেদন না করার জন্য অনুরোধ করতেন এবং ঘুষের প্রস্তাবও দিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা দৃশ্যমান তদন্ত শুরু হয়নি অদৃশ্য কারণে।

মোহাম্মদপুরের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, রফিকুল ইসলাম ডিপিডিসির একজন দুর্নীতিবাজ ও বাটপার অবৈধ অর্থ দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে রেখেছেন এইজন্য বারবার পার পেয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিয়মিতভাবে তার অবৈধ আয়ের অংশ নির্দিষ্ট মহলে বিতরণ করন নিজের নিরাপত্তার জন্য।

সম্প্রতি রফিকুল ধানমন্ডি থেকে বকশিবাজার বদলি হন এখানেও তিনি থেমে নেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন তার সহকর্মী বলেন, তিনি অনেক ধুরন্দর টাইপের লোক এবং বেশ কয়েকজন দুর্নীতিবাজ মিটার রিডারের নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি এবং তার জাতীয় পরিচয় পত্রে স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া আছে সেটা সম্পূর্ণ ভুল। অনেকের ধারণা তিনি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ডিপিডিসিতে চাকরি নিয়েছেন, তার গ্রামের বাড়ি পাবনা সাথিয়া উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামে অথচ সেই গ্রামে রফিকুল ইসলাম নামে কোন ব্যক্তি নেই।

২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, তিনি একজন সাংবাদিককে ডিজিএফআই দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানের ১ নম্বর রোডের ৪ ও ৮ নম্বর বাসা (৫ তলা ও ৪তলা) দুটির মালিক রফিকুল ইসলাম। তার বাড়ির কেয়ারটেকার আইয়ুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম তবে তিনি কিভাবে এত সম্পদ করেছেন আমি কিছু জানি না আমি শুধু বাড়ি দেখাশোনা করি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ডিপিডিসির বকশিবাজার কার্যালয় একাধিকবার গেলেও রফিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি এবং তার মুঠোফোনে বার্তা ও প্রতিবেদন পাঠিয়ে তার কোন বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

কালীগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে গোসলে নেমে শিশুর মৃত্যু

ডিপিডিসির মিটার রিডার রফিকুল বিদ্যুৎ চুরির টাকায় বাড়ি গাড়িসহ বিপুল সম্পদের মালিক 

আপডেট সময় ০২:৩২:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

শেখ ফয়সাল আহমেদ

ডিপিডিসির মিটার রিডারের পদটি যেন আলাদিনের চেরাগ ঘষা দিলেই শুধু টাকা আর টাকা অনেক মিটার রিডার অবৈধ সংযোগ, মিটার কারসাজি ও বিল কমানোর নামে অর্থ আদায় করে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়ে গেছেন একই পথ অনুসরণ করেছেন রফিকুল ইসলাম।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)-এর একজন মিটার রিডার একেএম রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের গুরুতর অভিযোগ ও তার ঘুষ দুর্নীতি নিয়ে একাধিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও বহাল তবিয়তে আছেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ, মিটার টেম্পারিং ও বিদ্যুৎ বিল কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন এবং এখনো চলমান রয়েছে। পরোয়া করেন না কাউকে নিজেকে পরিচয় দেন খুব প্রভাবশালী হিসেবে।

২০২৩ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর চাঁদ উদ্যানের বাসিন্দা সোয়েব হোসেন তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, অভিযোগকারী সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর ও আশপাশের এলাকায় বস্তি ও বাণিজ্যিক স্থাপনায় অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আসছিলেন। এসব সংযোগের বিনিময়ে প্রতি মাসে নেওয়া হতো মোটা অঙ্কের ঘুষ। একইসাথে, আবাসিক গ্রাহকদের মিটারে কারচুপি করে বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বড় অঙ্কের টাকা।

রফিকুল ইসলামের নামে রয়েছে, মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানে দুটি বহুতল ভবন, যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। এছাড়া ও কাটাসুর ও লালমাটিয়ায় দুটি ফ্ল্যাট, নিজ এলাকায় কয়েক একর ফসলি জমি, দুটি মোটরবাইক, দুটি মাইক্রোবাস এবং একটি বন্ধকী ফ্ল্যাটও আকার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এসব সম্পদের কোনোটিই তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

ইতিপূর্বে বিভিন্ন সাংবাদিকের কাছে রফিকুল ইসলাম নিজেই স্বীকার করেছিলেন, দুর্নীতির টাকায় তিনি চাঁদ উদ্যানে দুটি বাড়ি নির্মাণ করেছেন। তবে অধিকাংশ সাংবাদিককে তিনি প্রতিবেদন না করার জন্য অনুরোধ করতেন এবং ঘুষের প্রস্তাবও দিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে এখনো কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বা দৃশ্যমান তদন্ত শুরু হয়নি অদৃশ্য কারণে।

মোহাম্মদপুরের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, রফিকুল ইসলাম ডিপিডিসির একজন দুর্নীতিবাজ ও বাটপার অবৈধ অর্থ দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে রেখেছেন এইজন্য বারবার পার পেয়ে যাচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি নিয়মিতভাবে তার অবৈধ আয়ের অংশ নির্দিষ্ট মহলে বিতরণ করন নিজের নিরাপত্তার জন্য।

সম্প্রতি রফিকুল ধানমন্ডি থেকে বকশিবাজার বদলি হন এখানেও তিনি থেমে নেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন তার সহকর্মী বলেন, তিনি অনেক ধুরন্দর টাইপের লোক এবং বেশ কয়েকজন দুর্নীতিবাজ মিটার রিডারের নেতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি এবং তার জাতীয় পরিচয় পত্রে স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া আছে সেটা সম্পূর্ণ ভুল। অনেকের ধারণা তিনি ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে ডিপিডিসিতে চাকরি নিয়েছেন, তার গ্রামের বাড়ি পাবনা সাথিয়া উপজেলার বোয়ালমারী গ্রামে অথচ সেই গ্রামে রফিকুল ইসলাম নামে কোন ব্যক্তি নেই।

২০২৩ সালে একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, তিনি একজন সাংবাদিককে ডিজিএফআই দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানের ১ নম্বর রোডের ৪ ও ৮ নম্বর বাসা (৫ তলা ও ৪তলা) দুটির মালিক রফিকুল ইসলাম। তার বাড়ির কেয়ারটেকার আইয়ুব আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম তবে তিনি কিভাবে এত সম্পদ করেছেন আমি কিছু জানি না আমি শুধু বাড়ি দেখাশোনা করি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ডিপিডিসির বকশিবাজার কার্যালয় একাধিকবার গেলেও রফিকুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি এবং তার মুঠোফোনে বার্তা ও প্রতিবেদন পাঠিয়ে তার কোন বক্তব্য নেওয়া যায়নি।