ঢাকা , মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জুলাই অপরাধীদের তালিকা না দেয়াও অপরাধ ত্রিশালে নূর মোহাম্মদ হত্যাকান্ড খুনিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবীতে অবরোধ ও বিক্ষোভ সুতার মিলে ভাগ্যের চাকা খুলে যাচ্ছে রায়গঞ্জের অবহেলিত গ্রামীণ নারীদের কুড়িগ্রাম ভূরুঙ্গামারীতে নিখোঁজের ৩ দিন পর কবরস্থান থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার কালীগঞ্জে বাজেট সভা ও ওএমএস ডিলার নিয়োগ বিষয়ক আলোচনা      বিপুল পরিমান ইয়াবাসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ী কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নতুন কোন করারোপ ছাড়াই গৌরীপুর পৌরসভার বাজেট ঘোষণা কলামিস্ট মামুন মানবতার অগ্রদূত, তার চেষ্টায় ঘর পেলো খোকন। হত্যা চেষ্টা মামলার এজাহারনামীয় আসামী সবুজ কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। যৌতুকের দায়ে হত্যা মামলার প্রধান পলাতক আসামী শামীম শেখ কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। 

হবিগঞ্জে স্কুল ভবন নির্মাণ কাজ চলাকালেই ধসে পরেছে 

হবিগঞ্জে স্কুল ভবন নির্মাণ কাজ চলাকালেই ধসে পরেছে 

লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবলে একটি স্কুল ভবনের নির্মাণকাজ চলাকালেই ধসে পড়েছে দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি। এলাকাবাসীর অভিযোগ- নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার এবং ডিজাইনবহির্ভূত কাজের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী এরই মধ্যে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খাগাউড়া ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (পিইডিপি-৪)-এর আওতায় ভবনটি বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ভবনের প্রথম তলার ছাদ ঢালাই শেষ হয়েছে আগেই। বর্তমানে দ্বিতীয় তলার ছাদের প্রস্তুতি চলছিল।

এর মধ্যে গত ১৯ জুন দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির ঢালাই করা হয়। কিন্তু মাত্র ছয় দিনের মাথায় বুধবার রাতে পুরো সিঁড়ি ধসে পড়ে। এ ছাড়া সিঁড়ির ওপরের অ্যাপ্রোচ ও পিলারের ঢালাইও খসে পড়ছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাদের অভিযোগ- পুরো ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়ম হচ্ছে এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।

ঘটনার পরদিন নির্মাণকাজে আসা শ্রমিকদের কাজে বাধা দেন গ্রামবাসী। এ সময় ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। গ্রামের বাসিন্দা ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘মাত্র কয়েক দিন আগে ঢালাই করা সিঁড়ি হঠাৎ ধসে পড়ে। সিঁড়ির ওপর তখন শ্রমিকরাও ছিলেন। তারা লাফ দিয়ে কোনোভাবে রক্ষা পান। সামান্য সময়ের পার্থক্যে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।

তিনি আরও বলেন, পুরো ভবনটিতে অনিয়ম করা হয়েছে। নির্মাণের আগেই যেখানে ধসে পড়ছে, সেখানে ভবিষ্যতে কী হবে বুঝতেই পারছেন। আরেক বাসিন্দা সুমন মিয়া বলেন, শুরু থেকেই অনিয়ম করা হচ্ছে। রড-সিমেন্ট কম দিয়ে ঢালাই হচ্ছে, এ জন্যই সিঁড়ি ভেঙে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বিপুল সূত্রধর বলেন, এই বিদ্যালয়ে আমাদের শিশুরা লেখাপড়া করে। ভবন যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তা হলে আমরা কীভাবে তাদের পাঠাব? চাই ভবনটি মজবুতভাবে নির্মাণ হোক এবং বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। ভবনের নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ সেলিম। প্রতিষ্ঠানটির মালিক বাহুবল উপজেলা বিএনপির সভাপতি তুষার চৌধুরী। তিনি বলেন, সিঁড়িতে যতগুলো ধাপ থাকার কথা, তার একটি কম রয়েছে এতে ডিজাইনবহির্ভূত হয়েছে ভুল মানুষেরই হয়।
এলজিইডি আমাকে এই সিঁড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছে। হয়তো দু-একদিনের মধ্যেই ভাঙতাম, কিন্তু তার আগেই দুষ্কৃতকারীরা এটি ভেঙে ফেলেছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিযুক্ত সার্ভেয়ার উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, নির্মাণকাজে অনিয়ম ও ডিজাইনবহির্ভূত হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছিল। গত ২২ জুন ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়েছে। এর পরই শুন লাম সিঁড়ি ধসে পড়েছে।

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই অপরাধীদের তালিকা না দেয়াও অপরাধ

হবিগঞ্জে স্কুল ভবন নির্মাণ কাজ চলাকালেই ধসে পরেছে 

আপডেট সময় ০১:৪১:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বাহুবলে একটি স্কুল ভবনের নির্মাণকাজ চলাকালেই ধসে পড়েছে দ্বিতীয় তলার সিঁড়ি। এলাকাবাসীর অভিযোগ- নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার এবং ডিজাইনবহির্ভূত কাজের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী এরই মধ্যে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খাগাউড়া ২নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (পিইডিপি-৪)-এর আওতায় ভবনটি বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ভবনের প্রথম তলার ছাদ ঢালাই শেষ হয়েছে আগেই। বর্তমানে দ্বিতীয় তলার ছাদের প্রস্তুতি চলছিল।

এর মধ্যে গত ১৯ জুন দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির ঢালাই করা হয়। কিন্তু মাত্র ছয় দিনের মাথায় বুধবার রাতে পুরো সিঁড়ি ধসে পড়ে। এ ছাড়া সিঁড়ির ওপরের অ্যাপ্রোচ ও পিলারের ঢালাইও খসে পড়ছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাদের অভিযোগ- পুরো ভবনের নির্মাণকাজে অনিয়ম হচ্ছে এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।

ঘটনার পরদিন নির্মাণকাজে আসা শ্রমিকদের কাজে বাধা দেন গ্রামবাসী। এ সময় ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। গ্রামের বাসিন্দা ফাহিম আহমেদ বলেন, ‘মাত্র কয়েক দিন আগে ঢালাই করা সিঁড়ি হঠাৎ ধসে পড়ে। সিঁড়ির ওপর তখন শ্রমিকরাও ছিলেন। তারা লাফ দিয়ে কোনোভাবে রক্ষা পান। সামান্য সময়ের পার্থক্যে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।

তিনি আরও বলেন, পুরো ভবনটিতে অনিয়ম করা হয়েছে। নির্মাণের আগেই যেখানে ধসে পড়ছে, সেখানে ভবিষ্যতে কী হবে বুঝতেই পারছেন। আরেক বাসিন্দা সুমন মিয়া বলেন, শুরু থেকেই অনিয়ম করা হচ্ছে। রড-সিমেন্ট কম দিয়ে ঢালাই হচ্ছে, এ জন্যই সিঁড়ি ভেঙে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি বিপুল সূত্রধর বলেন, এই বিদ্যালয়ে আমাদের শিশুরা লেখাপড়া করে। ভবন যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয়, তা হলে আমরা কীভাবে তাদের পাঠাব? চাই ভবনটি মজবুতভাবে নির্মাণ হোক এবং বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। ভবনের নির্মাণকাজের দায়িত্বে রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শেখ সেলিম। প্রতিষ্ঠানটির মালিক বাহুবল উপজেলা বিএনপির সভাপতি তুষার চৌধুরী। তিনি বলেন, সিঁড়িতে যতগুলো ধাপ থাকার কথা, তার একটি কম রয়েছে এতে ডিজাইনবহির্ভূত হয়েছে ভুল মানুষেরই হয়।
এলজিইডি আমাকে এই সিঁড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছে। হয়তো দু-একদিনের মধ্যেই ভাঙতাম, কিন্তু তার আগেই দুষ্কৃতকারীরা এটি ভেঙে ফেলেছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিযুক্ত সার্ভেয়ার উজ্জ্বল মণ্ডল বলেন, নির্মাণকাজে অনিয়ম ও ডিজাইনবহির্ভূত হওয়ার বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছিল। গত ২২ জুন ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়েছে। এর পরই শুন লাম সিঁড়ি ধসে পড়েছে।