ঢাকা , সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাংবাদিক পরিচয়ে জাল টাকার ব্যবসা  ভোক্তার অধিকার রক্ষায় সচেতনতা জরুরি: ড. কেনেডি জগন্নাথপুরে গ্রেফতারী পরোয়ানাভুক্ত আসামী সহ গ্রেফতার ৩ নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ৯,৬২০ পিস বার্মিজ ইয়াবা উদ্ধার কুমিল্লার লালমাইয়ে গাঁজা সেবনের দায়ে দুই যুবককে কারাদণ্ড দিয়েছেন গ্রাম্যমান আদালত। অবৈধ বালু উত্তোলন রোধ ও পরিবেশ সুরক্ষা, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমে প্রথম স্থান অর্জন করেন নালিতাবাড়ী উপজেলা  ঘরে ঘরে ৩১ দফা পৌঁছে দিতে হবে: ফয়সল চৌধুরী র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক ১ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা, কসমেটিক্স মালামাল জব্দ এবং সাদিয়া কসমেটিক্স সিলগালা। কালীগঞ্জে শহীদ জিয়াউর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চারা গাছ বিতরণ  ময়মনসিংহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কর্তৃক অভিযানে মাদক কারবারি গ্রেফতার ০১

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী-ছেলে- সহ মহানগর আ.লীগ নেতা বেন্টুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা 

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী-ছেলে- সহ মহানগর আ.লীগ নেতা বেন্টুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা 

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী, ছেলেসহ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর (৫৩) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তাঁর গৃহিণী স্ত্রী নাসিমা আলম (৪৮) ও বেকার ছাত্র রুহিত আমিনকে (২৯), দুদকের ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে। রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, মামলার বাদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। মামলার প্রধান আসামি আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তাঁর স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলমূলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমি পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাঁদের মোট ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। অথচ সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেন। ফলে তাঁর আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়। অপর দিকে অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিণী হলেও তাঁর নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে।

তাঁর টিআইএন নম্বর-৫৮৫৬৫৯৪৭৫১৯৬। নাসিমা আলমের ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিল করা আয়কর নথি অনুযায়ী, তাঁর নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তাঁর নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তাঁর নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে। তাঁর টিআইএন নম্বর-৫৯২৮১৫৩২০৬০৩। ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিল করা আয়কর নথি অনুযায়ী, তাঁর নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। অনুসন্ধানকালে তাঁরও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তাঁর আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে।

আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।  দুদক বলছে, নাসিমা আলম তাঁর স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তাঁর বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তাঁরাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় আজিজুল আলম বেন্টু ছাড়াও স্ত্রী ও ছেলেকে আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, মামলাটি দায়েরের পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।

 

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক পরিচয়ে জাল টাকার ব্যবসা 

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী-ছেলে- সহ মহানগর আ.লীগ নেতা বেন্টুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা 

আপডেট সময় ০১:১৩:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী, ছেলেসহ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টুর (৫৩) বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তাঁর গৃহিণী স্ত্রী নাসিমা আলম (৪৮) ও বেকার ছাত্র রুহিত আমিনকে (২৯), দুদকের ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে। রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, মামলার বাদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। মামলার প্রধান আসামি আজিজুল আলম বেন্টু আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একচেটিয়া বালুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকে তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী সরকারের আমলেই। আজিজুল আলম বেন্টু, তাঁর স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলমূলে ৯ দশমিক ৪০০৮১৮৯ একর জমি পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাঁদের মোট ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। অথচ সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেন। ফলে তাঁর আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দেখা যায়। অপর দিকে অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, বেন্টুর স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিণী হলেও তাঁর নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে।

তাঁর টিআইএন নম্বর-৫৮৫৬৫৯৪৭৫১৯৬। নাসিমা আলমের ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিল করা আয়কর নথি অনুযায়ী, তাঁর নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামী বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তাঁর নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তাঁর নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে। তাঁর টিআইএন নম্বর-৫৯২৮১৫৩২০৬০৩। ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিল করা আয়কর নথি অনুযায়ী, তাঁর নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। অনুসন্ধানকালে তাঁরও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবা বেন্টুর অর্জিত সম্পদ তাঁর আয়কর ফাইলে দেখিয়ে নিজ নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে।

আয়কর নথিতে দেখা যায়, বেন্টু তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকাও দিয়েছেন।  দুদক বলছে, নাসিমা আলম তাঁর স্বামী আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তাঁর বাবা আজিজুল আলম বেন্টুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে তাঁরাও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় আজিজুল আলম বেন্টু ছাড়াও স্ত্রী ও ছেলেকে আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, মামলাটি দায়েরের পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।