ঢাকা , রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ইসলামী আন্দোলনের জাতীয় মহা সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ফেনীতে জেলা আন্দোলনের যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত। নবীগঞ্জে নৌকা বাইচ দেখতে এসে হামলা মারধর ও লুটপাটের শিকার শেভরনের কন্টাক্টর লুতফুর।  জাতীয় নাগরিক পার্টির শেরপুর জেলা শাখার সমন্বয় কমিটি গঠিত বুড়িচংয়ে মহাসড়কে সেনাবাহিনীর চেকপোস্ট ও নিরাপত্তা কার্যক্রম বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল মোমেনের ইন্তেকালে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের শোক  সংস্কার ও বিচার ছাড়া কোন নির্বাচনই বিশ্বাসযোগ্য হবে না-ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। বানারীপাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬ মাস ধরে চালক না থাকায় রোগীরা সরকারী অ্যাম্বুলেন্স সেবা বঞ্চিত ! রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ অবমুক্তকরন ও বৃক্ষ রোপণ দেবীগঞ্জে আইসক্রিম বিক্রেতা দুর্ঘটনায় মৃত্যু নাইক্ষ‍্যংছড়িতে ওলামা মশায়েখ পরিষদের তারবিয়াত বৈঠক অনুষ্ঠিত

অমানবিকতার চূড়ান্ত রূপ: মায়ের কান্না শুনেনি বড় মেয়ে, ছোট মেয়ে ছুটলেন থানায়

অমানবিকতার চূড়ান্ত রূপ: মায়ের কান্না শুনেনি বড় মেয়ে, ছোট মেয়ে ছুটলেন থানায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : মা — যে শব্দে লুকিয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, নির্ভরতা আর আত্মত্যাগ। সেই মাকেই যখন আপন সন্তান বারান্দায় ঠাঁই দেয় না, তখন প্রশ্ন ওঠে আমাদের মানবতা, পারিবারিক মূল্যবোধ ও বিবেক নিয়ে।
রাজশাহী নগরীর রাজাহাটা এলাকার ৭৫ বছর বয়সী হোসনে আরা আজ আশ্রয় খুঁজছেন নিজেরই মৃত স্বামীর ভিটেমাটিতে। অভিযোগ, বড় মেয়ে আলম আরা দিনু (৫০) ও জামাতা আব্দুল মালেক বাবু (৬০) পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, তার ঘরটিও নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি থাকেন খোলা বারান্দায়—যেখানে ঈদের সময় বলেছে গরুর জায়গা হবে, মায়ের নয়!

মায়ের কান্না শুনেনি বড় মেয়ে, ছোট মেয়ে ছুটলেন থানায় ১২ জুন বোয়ালিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ছোট মেয়ে আনজিল আরা। তিনি জানান, “আমার বাবার রেখে যাওয়া বাড়িতে তিনটি রুম। একটি রুমে মা থাকতেন, বাকি দুটি রুম গোডাউন ভাড়া দিয়ে বড় বোন ও দুলাভাই আয় করতেন। এখন তারা মায়ের ঘরটিও ভেঙে ফেলেছে। মা এখন বারান্দায় থাকেন—এই রোদ-বৃষ্টির মধ্যে!”
তিনি আরও বলেন, “ঈদের আগে বলে দিয়েছে মা যেন চলে যান, গরুর জায়গা দরকার! এ কথাগুলো একজন সন্তান কিভাবে বলতে পারে?” চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি আনজিল আরা।

অভিযুক্ত আব্দুল মালেক বাবু কেবল বলেছেন, “সাক্ষাতে কথা বলবো।” বোয়ালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোতালেব হোসেন জানান, “বিষয়টি আপোষ-মীমাংসার চেষ্টায় রয়েছে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে এডভোকেট রজব আলী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান ও দণ্ডবিধি অনুযায়ী, মা-বাবাকে অবহেলা বা নির্যাতন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। বিশেষ করে ‘পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী, অবহেলা করলে সন্তানদের জরিমানা ও কারাদণ্ড হতে পারে। আর ধর্মীয় ও সামাজিক দিক থেকে দেখলেও মা-বাবার প্রতি দায়িত্বপালন শুধু কর্তব্য নয়, চরমতম দায়িত্ব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী জেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, একজন মা—যিনি সন্তানদের না খেয়ে খাইয়েছেন, না ঘুমিয়ে জেগেছেন—আজ নিজের শেষ বয়সে আশ্রয়ের জন্য লড়ছেন। ঘরের বারান্দায় ঠাঁই নেই, ঘরের মানুষদের হৃদয়ে জায়গা নেই!

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, এটি একটি সমাজের বিবেকের প্রতিচ্ছবি। আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি? সন্তানদের কাছে মা এখন কি বোঝা হয়ে গেছে?

আপলোডকারীর তথ্য

news room

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসলামী আন্দোলনের জাতীয় মহা সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে ফেনীতে জেলা আন্দোলনের যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত।

অমানবিকতার চূড়ান্ত রূপ: মায়ের কান্না শুনেনি বড় মেয়ে, ছোট মেয়ে ছুটলেন থানায়

আপডেট সময় ১১:৫৮:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : মা — যে শব্দে লুকিয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, নির্ভরতা আর আত্মত্যাগ। সেই মাকেই যখন আপন সন্তান বারান্দায় ঠাঁই দেয় না, তখন প্রশ্ন ওঠে আমাদের মানবতা, পারিবারিক মূল্যবোধ ও বিবেক নিয়ে।
রাজশাহী নগরীর রাজাহাটা এলাকার ৭৫ বছর বয়সী হোসনে আরা আজ আশ্রয় খুঁজছেন নিজেরই মৃত স্বামীর ভিটেমাটিতে। অভিযোগ, বড় মেয়ে আলম আরা দিনু (৫০) ও জামাতা আব্দুল মালেক বাবু (৬০) পরিকল্পিতভাবে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। শুধু তাই নয়, তার ঘরটিও নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এখন তিনি থাকেন খোলা বারান্দায়—যেখানে ঈদের সময় বলেছে গরুর জায়গা হবে, মায়ের নয়!

মায়ের কান্না শুনেনি বড় মেয়ে, ছোট মেয়ে ছুটলেন থানায় ১২ জুন বোয়ালিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ছোট মেয়ে আনজিল আরা। তিনি জানান, “আমার বাবার রেখে যাওয়া বাড়িতে তিনটি রুম। একটি রুমে মা থাকতেন, বাকি দুটি রুম গোডাউন ভাড়া দিয়ে বড় বোন ও দুলাভাই আয় করতেন। এখন তারা মায়ের ঘরটিও ভেঙে ফেলেছে। মা এখন বারান্দায় থাকেন—এই রোদ-বৃষ্টির মধ্যে!”
তিনি আরও বলেন, “ঈদের আগে বলে দিয়েছে মা যেন চলে যান, গরুর জায়গা দরকার! এ কথাগুলো একজন সন্তান কিভাবে বলতে পারে?” চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি আনজিল আরা।

অভিযুক্ত আব্দুল মালেক বাবু কেবল বলেছেন, “সাক্ষাতে কথা বলবো।” বোয়ালিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মোতালেব হোসেন জানান, “বিষয়টি আপোষ-মীমাংসার চেষ্টায় রয়েছে। না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে এডভোকেট রজব আলী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান ও দণ্ডবিধি অনুযায়ী, মা-বাবাকে অবহেলা বা নির্যাতন করা দণ্ডনীয় অপরাধ। বিশেষ করে ‘পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী, অবহেলা করলে সন্তানদের জরিমানা ও কারাদণ্ড হতে পারে। আর ধর্মীয় ও সামাজিক দিক থেকে দেখলেও মা-বাবার প্রতি দায়িত্বপালন শুধু কর্তব্য নয়, চরমতম দায়িত্ব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজশাহী জেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, একজন মা—যিনি সন্তানদের না খেয়ে খাইয়েছেন, না ঘুমিয়ে জেগেছেন—আজ নিজের শেষ বয়সে আশ্রয়ের জন্য লড়ছেন। ঘরের বারান্দায় ঠাঁই নেই, ঘরের মানুষদের হৃদয়ে জায়গা নেই!

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনা শুধু একটি পরিবারের নয়, এটি একটি সমাজের বিবেকের প্রতিচ্ছবি। আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি? সন্তানদের কাছে মা এখন কি বোঝা হয়ে গেছে?