ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাজনীতির কৌশল: ধৈর্য্য ও সততার অপরিহার্য সংমিশ্রণ তরুণদের দক্ষতা প্রমাণে প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে টুর্নামেন্ট: এড. এমরান আহমেদ চৌধুরী হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে ডুবাই প্রবাসী কে হত্যার চেষ্টা  সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ  আবহাওয়া ও আকৃতির উপর ভিত্তি করে ১৫ মে থেকে রাজশাহীতে আম পাড়া শুরু  মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী বিল্লাল কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। মধ্যপাড়া বন বিভাগ কর্তৃক সিএমবি রাস্তার পার্শ্বস্হ ৬ টি দোকান ভাংচুর, এলাকাবাসীর ক্ষোভ  রানীশংকৈল জগদল সীমান্তে বিএসএফের হাতে ৩ বাংলাদেশী আটক কালীগঞ্জে কম্বাইন হারভেস্টারে সমলয়ের বোরো ধান কর্তন উৎসব হিজলায় সয়াবিন ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ

বালাকোটের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি ও ইসলামের কল্যাণে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে -মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

বালাকোটের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি ও ইসলামের কল্যাণে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে -মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

বালাকোট যুদ্ধে সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ বেরলবীর আত্মত্যাগ ও বিরোচিত শাহাদাত ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের সংগ্রামী ইতিহাসের এক অনন্য, গৌরবোজ্জল ও যুগান্তকারী অধ্যায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

তিনি আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর আল ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত বালাকোট দিবসের এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত প্রমূখ।

সেলিম উদ্দিন বলেন, ১৮৩১ সালের ৬ মে বালাকোটে ব্রিটিশ মদদপুষ্ট অত্যাচারী শিখদের বিরুদ্ধে নিজের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জিহাদ করে হাসিমুখে শাহাদাতকে বরণ করে নিয়েছেন আযাদী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)। একই সাথে শাহাদাতবরণ করেন ভারতের নানাপ্রান্ত থেকে আসা ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর ঈমানদারদের এক বিরাট বহর। এ যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ফলাফল বিশ্লেষণে মুজাহিদীনদেরকে সুষ্পষ্টভাবে বাহ্যিক বিজয়ী বলা যায় না। কিন্তু বালাকোটের মুজাহিদদের জিহাদই এ উপমহাদেশে এখনো ইসলামের নূর প্রজ্জলিত রাখার অন্যতম অনুসঙ্গ।

১৮৩১ সালের বালাকোটের জিহাদ কেবল কয়েক হাজার শিখ সেনার বিরুদ্ধে কয়েকশত মুজাহিদের নিছক এক যুদ্ধ ছিলনা বরং এ জিহাদ ছিল পুনর্জাগরণের। এ জিহাদের শিকড় যুক্ত ছিল বদর, ওহুদ, কারবালা আর নদিয়ার সাথে। বাংলায় ইসলামের নবযুদের সূচনায় ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির নদিয়া বিজয় যতোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, উপমহাদেশে দ্বীনের নিভু নিভু আলোকে প্রজ্জ্বলিত রাখতে এবং এ জনপদে ইসলামের অস্তিত্বের জানান দিতে সাইয়্যেদ আহমদ শহীদের বালাকোটর জিহাদও একইরকম গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বালাকোটের ত্যাগ, কুরবানী ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি ও ইসলামের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, বালাকোটের যুদ্ধ নিছক একটি যুদ্ধ ছিলো না বরং তা ছিলো ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম ও মুসলমানদের অস্তিত্ব টিকে থাকার ক্ষেত্রে এক নিরন্তর সংগ্রাম। বালাকোটের যুদ্ধ মুজাহেদীনের আত্মদানের স্মৃতি, ঘুমিয়ে থাকা মুসলিম সমাজের আবারো জিহাদের পথ দেখানো মুক্তি সংগ্রামের এক সুমহান আলোকবর্তিকা। প্রায় দু’ শতাব্দী অতিক্রান্ত হলেও বালাকোটের সংগ্রামী চেতনা, মুজাহিদদের রণহুঙ্কার এখনো উপমহাদেশের মুসলমিদের জন্য প্রাসঙ্গিকই শুধু নয় বরং টালমাটাল মুসলিম সমাজের জন্য দিকনির্দেশক হিসাবে ইতিহাসের পাতায় চির অম্লান আছে।

কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, এদেশে প্রজন্মের পর প্রজন্ম পাঠ্যবইয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের যে ইতিহাস পড়ানো হয় সেখানে বালাকোট সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। পাঠ্য বইয়ে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ, তিতুমীরের বাশেঁরকেল্লার কথা থাকলেও তিতুমীর যেখান থেকে ঈমানের, জিহাদের দীক্ষা নিয়েছিলেন সে জিহাদী সাইয়্যেদ আহমদ (র.) ও বালাকোটের বাইআতকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে বারবার। তাই মুসলমানদের ঈমান, আকিদাহ রক্ষায় এবং দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে জীবনের সকল ক্ষেত্রে বালাকোটের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।

মহানগরী আমীর বলেন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী ফ্যাসীবাদের পতন হলেও আমাদের পরিপূর্ণ বিজয় এখনো আসেনি বরং বিজয়ের পথচলা সবে শুরু হয়েছে। কারণ, স্বৈরাচার ক্ষমতাচ্যুত হলেও রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে পতিতদের প্রতিভূরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। মাফিয়াতন্ত্রীরা রাষ্ট্রের সকল সেক্টরকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে।

একই সাথে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে। সর্বোপরি আগামী সংসদকে প্রতিনিধিত্বশীল করার জন্য পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রচলন জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সকল প্রকার চাপ ও ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার আহবান জানান। অন্যথায় পতিতরা নতুন করে মাথাচাড়া দেবে।

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজনীতির কৌশল: ধৈর্য্য ও সততার অপরিহার্য সংমিশ্রণ

বালাকোটের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি ও ইসলামের কল্যাণে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে -মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

আপডেট সময় ০৩:৪৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

বালাকোট যুদ্ধে সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ বেরলবীর আত্মত্যাগ ও বিরোচিত শাহাদাত ভারতীয় উপমহাদেশে মুসলমানদের সংগ্রামী ইতিহাসের এক অনন্য, গৌরবোজ্জল ও যুগান্তকারী অধ্যায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

তিনি আজ সন্ধ্যায় রাজধানীর আল ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত বালাকোট দিবসের এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা.ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত প্রমূখ।

সেলিম উদ্দিন বলেন, ১৮৩১ সালের ৬ মে বালাকোটে ব্রিটিশ মদদপুষ্ট অত্যাচারী শিখদের বিরুদ্ধে নিজের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জিহাদ করে হাসিমুখে শাহাদাতকে বরণ করে নিয়েছেন আযাদী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.)। একই সাথে শাহাদাতবরণ করেন ভারতের নানাপ্রান্ত থেকে আসা ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতার স্বপ্নে বিভোর ঈমানদারদের এক বিরাট বহর। এ যুদ্ধের প্রত্যক্ষ ফলাফল বিশ্লেষণে মুজাহিদীনদেরকে সুষ্পষ্টভাবে বাহ্যিক বিজয়ী বলা যায় না। কিন্তু বালাকোটের মুজাহিদদের জিহাদই এ উপমহাদেশে এখনো ইসলামের নূর প্রজ্জলিত রাখার অন্যতম অনুসঙ্গ।

১৮৩১ সালের বালাকোটের জিহাদ কেবল কয়েক হাজার শিখ সেনার বিরুদ্ধে কয়েকশত মুজাহিদের নিছক এক যুদ্ধ ছিলনা বরং এ জিহাদ ছিল পুনর্জাগরণের। এ জিহাদের শিকড় যুক্ত ছিল বদর, ওহুদ, কারবালা আর নদিয়ার সাথে। বাংলায় ইসলামের নবযুদের সূচনায় ইখতিয়ার উদ্দীন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজির নদিয়া বিজয় যতোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, উপমহাদেশে দ্বীনের নিভু নিভু আলোকে প্রজ্জ্বলিত রাখতে এবং এ জনপদে ইসলামের অস্তিত্বের জানান দিতে সাইয়্যেদ আহমদ শহীদের বালাকোটর জিহাদও একইরকম গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বালাকোটের ত্যাগ, কুরবানী ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি ও ইসলামের জন্য যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান।

তিনি বলেন, বালাকোটের যুদ্ধ নিছক একটি যুদ্ধ ছিলো না বরং তা ছিলো ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম ও মুসলমানদের অস্তিত্ব টিকে থাকার ক্ষেত্রে এক নিরন্তর সংগ্রাম। বালাকোটের যুদ্ধ মুজাহেদীনের আত্মদানের স্মৃতি, ঘুমিয়ে থাকা মুসলিম সমাজের আবারো জিহাদের পথ দেখানো মুক্তি সংগ্রামের এক সুমহান আলোকবর্তিকা। প্রায় দু’ শতাব্দী অতিক্রান্ত হলেও বালাকোটের সংগ্রামী চেতনা, মুজাহিদদের রণহুঙ্কার এখনো উপমহাদেশের মুসলমিদের জন্য প্রাসঙ্গিকই শুধু নয় বরং টালমাটাল মুসলিম সমাজের জন্য দিকনির্দেশক হিসাবে ইতিহাসের পাতায় চির অম্লান আছে।

কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, এদেশে প্রজন্মের পর প্রজন্ম পাঠ্যবইয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের যে ইতিহাস পড়ানো হয় সেখানে বালাকোট সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। পাঠ্য বইয়ে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ, তিতুমীরের বাশেঁরকেল্লার কথা থাকলেও তিতুমীর যেখান থেকে ঈমানের, জিহাদের দীক্ষা নিয়েছিলেন সে জিহাদী সাইয়্যেদ আহমদ (র.) ও বালাকোটের বাইআতকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে বারবার। তাই মুসলমানদের ঈমান, আকিদাহ রক্ষায় এবং দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে জীবনের সকল ক্ষেত্রে বালাকোটের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।

মহানগরী আমীর বলেন, ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারী ফ্যাসীবাদের পতন হলেও আমাদের পরিপূর্ণ বিজয় এখনো আসেনি বরং বিজয়ের পথচলা সবে শুরু হয়েছে। কারণ, স্বৈরাচার ক্ষমতাচ্যুত হলেও রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে পতিতদের প্রতিভূরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। মাফিয়াতন্ত্রীরা রাষ্ট্রের সকল সেক্টরকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অনুষ্ঠানের জন্য রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে।

একই সাথে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে। সর্বোপরি আগামী সংসদকে প্রতিনিধিত্বশীল করার জন্য পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রচলন জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সকল প্রকার চাপ ও ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করার আহবান জানান। অন্যথায় পতিতরা নতুন করে মাথাচাড়া দেবে।